ঢাকা ০৫:৩৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার রেস্তোরাঁ শিল্প বাঁচাতে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কক্সবাজারের রেস্তোরাঁ মালিকদের… বিমানবন্দরের আগুন তদন্তে বিশেষজ্ঞ আসছেন ৪ দেশ থেকে উখিয়ার রোহিঙ্গা ক্যাম্প থেকে ১ লক্ষ ১২ হাজার ৪৬৩ পিস ইয়াবা উদ্ধার: আটক ১ সাগরে নিম্নচাপ, বন্দরে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের জানাজা সম্পন্ন নির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ: ‘উখিয়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি’র অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের ইন্তেকাল: টিটিএনের শোক কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা লজ্জাজনক- জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ চকরিয়ায় কাভার্ডভ্যানের নিচে মোটর সাইকেল: নিহত-২ প্রার্থী চুড়ান্ত করা ,তারেক জিয়ার দেশে ফেরা, এনসিপির সাথে জোট প্রসঙ্গে যা বললেন সালাউদ্দিন আহমেদ প্রস্তুতি ছিলো চুড়ান্ত: আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড়ার আগেই স্থগিত স্বীকৃতি ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি হারাল কক্সবাজার বিমানবন্দর বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের অভিযান: নারী ও শিশুসহ ৪৪ অ’প’হৃ’ত উদ্ধার শাশুড়ির ১২ লাখ টাকার কিলারে খুন হন সালমান শাহ!

বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ ও বায়ুদূষণ মোকাবিলায় ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার এবং বায়ুমান উন্নয়নে দুটি প্রকল্পে মোট ৬৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ বুধবার (১৮ জুন) এই অর্থায়নের অনুমোদন দেয়।

বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ু মান উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পদ্বয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

গ্যাস সরবরাহে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

প্রথম প্রকল্প ‘এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহান্সমেন্ট’ এর আওতায় পেট্রোবাংলার জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করা হবে। ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি একটি আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে সাত বছরে ২.১ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহে সহায়তা করবে, যা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য ব্যবহৃত হবে।

বর্তমানে দেশের মোট গ্যাস ব্যবহারের এক-চতুর্থাংশ এলএনজি আমদানি নির্ভর, যার ৪২ শতাংশই বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার হয়। তাই গ্যাস সংকট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত করে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানিতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলায়িনকা এডেবিরি বলেন, ‘এই উদ্যোগ শিল্প ও সাধারণ জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। এটি অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।’

বায়ুমান উন্নয়নে ২৯০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

দ্বিতীয় প্রকল্প ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট’ এর আওতায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতায় বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করবে এবং আধুনিক মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি অকাল মৃত্যু এবং ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন কর্মদিবস হারিয়েছে, যা দেশের মোট জিডিপির ৮ দশমিক ৩ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতির কারণ।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০টি পুরোনো ডিজেলচালিত বাস সরিয়ে নতুন শূন্য-নিষ্কাশন (ইলেকট্রিক) বাস চালু করা হবে। পাশাপাশি পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, দুটি অকার্যকর কেন্দ্র আধুনিকীকরণ এবং ২০টি মোবাইল ভেহিকেল এমিশন ইউনিট স্থাপন করা হবে। এর ফলে বছরে আনুমানিক ২ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন পিএম ২ দশমিক ৫ নির্গমন হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের লিড এনভায়রনমেন্ট স্পেশালিস্ট আনা লুইসা গোমেস লিমা বলেন, ‘এটি বায়ুমান উন্নয়নের প্রথম বড় উদ্যোগ। যেহেতু বায়ু এক দেশের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, তাই এ প্রকল্প আঞ্চলিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বিশ্বব্যাংক দেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ আইডিএ’র বৃহত্তম অর্থ গ্রহণকারী দেশগুলোর অন্যতম।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনি জোট নিয়ে কোনো দলের সঙ্গে আলোচনা হয়নি: আখতার

This will close in 6 seconds

বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ ও বায়ুদূষণ মোকাবিলায় ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক

আপডেট সময় : ০১:৩১:৩৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ জুন ২০২৫

বাংলাদেশে গ্যাস সরবরাহ নিরাপত্তা জোরদার এবং বায়ুমান উন্নয়নে দুটি প্রকল্পে মোট ৬৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সহায়তা অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালনা পর্ষদ বুধবার (১৮ জুন) এই অর্থায়নের অনুমোদন দেয়।

বিশ্বব্যাংকের অন্তর্বর্তীকালীন কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, ‘জ্বালানি নিরাপত্তা ও বায়ু মান উন্নয়ন বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রকল্পদ্বয় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

গ্যাস সরবরাহে ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

প্রথম প্রকল্প ‘এনার্জি সেক্টর সিকিউরিটি এনহান্সমেন্ট’ এর আওতায় পেট্রোবাংলার জন্য সাশ্রয়ী অর্থায়নের সুযোগ তৈরি করা হবে। ৩৫০ মিলিয়ন ডলারের এই প্রকল্পটি একটি আইডিএ গ্যারান্টির মাধ্যমে সাত বছরে ২.১ বিলিয়ন ডলার বেসরকারি পুঁজি সংগ্রহে সহায়তা করবে, যা তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানির জন্য ব্যবহৃত হবে।

বর্তমানে দেশের মোট গ্যাস ব্যবহারের এক-চতুর্থাংশ এলএনজি আমদানি নির্ভর, যার ৪২ শতাংশই বিদ্যুৎ খাতে ব্যবহার হয়। তাই গ্যাস সংকট বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত করে অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। নতুন এই প্রকল্পের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে এলএনজি আমদানিতে অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ও কার্যকর পেমেন্ট ব্যবস্থার সুবিধা নিশ্চিত করা হবে।

প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের জ্যেষ্ঠ জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ওলায়িনকা এডেবিরি বলেন, ‘এই উদ্যোগ শিল্প ও সাধারণ জনগণের জন্য নির্ভরযোগ্য ও সাশ্রয়ী বিদ্যুৎ নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে। এটি অর্থনীতির টেকসই প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে।’

বায়ুমান উন্নয়নে ২৯০ মিলিয়ন ডলারের প্রকল্প

দ্বিতীয় প্রকল্প ‘বাংলাদেশ ক্লিন এয়ার প্রজেক্ট’ এর আওতায় ২৯০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি সমন্বিত কর্মপরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটি পরিবেশ অধিদপ্তরের আওতায় বায়ু দূষণ পর্যবেক্ষণ নেটওয়ার্ক শক্তিশালী করবে এবং আধুনিক মনিটরিং স্টেশন স্থাপন করবে।

বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, বায়ু দূষণে ২০১৯ সালে বাংলাদেশে ১ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি অকাল মৃত্যু এবং ২ দশমিক ৫ বিলিয়ন কর্মদিবস হারিয়েছে, যা দেশের মোট জিডিপির ৮ দশমিক ৩ শতাংশ সমপরিমাণ ক্ষতির কারণ।

এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৪০০টি পুরোনো ডিজেলচালিত বাস সরিয়ে নতুন শূন্য-নিষ্কাশন (ইলেকট্রিক) বাস চালু করা হবে। পাশাপাশি পাঁচটি নতুন যানবাহন পরিদর্শন কেন্দ্র নির্মাণ, দুটি অকার্যকর কেন্দ্র আধুনিকীকরণ এবং ২০টি মোবাইল ভেহিকেল এমিশন ইউনিট স্থাপন করা হবে। এর ফলে বছরে আনুমানিক ২ হাজার ৭৩৪ মেট্রিক টন পিএম ২ দশমিক ৫ নির্গমন হ্রাস পাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

প্রকল্পটির টিম লিডার ও বিশ্বব্যাংকের লিড এনভায়রনমেন্ট স্পেশালিস্ট আনা লুইসা গোমেস লিমা বলেন, ‘এটি বায়ুমান উন্নয়নের প্রথম বড় উদ্যোগ। যেহেতু বায়ু এক দেশের সীমানায় সীমাবদ্ধ নয়, তাই এ প্রকল্প আঞ্চলিক সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ে সহায়ক ভূমিকা রাখবে।’

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর থেকেই বিশ্বব্যাংক দেশের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করছে। এ পর্যন্ত বাংলাদেশকে ৪৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান ও স্বল্পসুদে ঋণ দিয়েছে সংস্থাটি। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ আইডিএ’র বৃহত্তম অর্থ গ্রহণকারী দেশগুলোর অন্যতম।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন