সরকারি প্রতিষ্ঠান পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মাঠ সহকারী মোহাম্মদ মনির, ২০২৩ সালের ৯ ডিসেম্বরে উখিয়া শাখায় কর্মরত অবস্থায় ইয়াবাসহ যাকে গ্রেফতার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
এ ঘটনার চারদিন পর ১৩ ডিসেম্বর, পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক শেখ মোহাম্মদ জামিনুর রহমান স্বাক্ষরিত এক আদেশে উখিয়ার পালংখালী ইউপি’র ধামনখালী গ্রামের বাসিন্দা জবর মুল্লুকের পুত্র মনির’কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
ঐ আদেশ অনুযায়ী তাকে কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়,দেড় বছর অতিবাহিত হলেও সেখানে বহাল তবিয়তে আছেন সীমান্তের শীর্ষ মাদক কারবারি হিসেবে পরিচিত এই ‘ইয়াবা মাফিয়া’।
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের একটি সূত্র বলছে, চাকরি বিধিমালা অনুযায়ী নিয়মিত বেতনভাতা পাচ্ছেন মনির।
কার্যালয়ে দিনের পর দিন অনুপস্থিত থেকেও ভূয়া হাজিরা’য় তিনি নিচ্ছেন সরকারি বেতন, উর্ধতন কর্মকর্তাদের মোটা টাকায় ম্যানেজ করে লোক দেখানো চাকরির সাথে সমানতালে মনির ব্যস্ত বেপরোয়া ইয়াবা কারবারে।
শীর্ষ রোহিঙ্গা মাদক কারবারি নবী হোসেনের সহযোগী মনিরের নেতৃত্বে ২০/২৫ জন সদস্যের সিন্ডিকেট উখিয়া সীমান্তে মাদক সহ চোরাকারবারের অপরাধ জগত নিয়ন্ত্রণ করছে।
সর্বশেষ ২ লাখ পিস অবৈধ ইয়াবা লেনদেনের ঘটনায় পালংখালীতে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। স্থানীয় সূত্র বলছে, গত ১০ এপ্রিল মিয়ানমার থেকে অবৈধভাবে এই চালান নিয়ে আসে রোহিঙ্গা ক্যাম্প-১০ এর বাসিন্দা মোস্তফা।
পরে ১ লাখ ৬০ হাজার ইয়াবা মোস্তফার কাছ থেকে কৌশলে হাতিয়ে নেয় মনির সিন্ডিকেট।
এ ঘটনার জের ধরে রোহিঙ্গা মাদক কারবারিদের সংঘবদ্ধ অন্য একটি সিন্ডিকেটের সাথে মনিরের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে চিন্তিত স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় এক স্কুল শিক্ষক বলেন, ‘মনির দুর্ধর্ষ মাদক ব্যবসায়ী, তার কারণে এলাকার যুব সমাজ নষ্ট হচ্ছে। সম্প্রতি ইয়াবা লেনদেন নিয়ে সে রোহিঙ্গাদের সাথে বিরোধে জড়িয়েছে, যেকোনো মূহুর্তে বড় ঘটনা ঘটতে পারে।’
পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের কক্সবাজার জেলার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা মনিরের ‘সাসপেন্ড’ থাকার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এখনো কেনো তার বিরুদ্ধে চূড়ান্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না কেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, ‘ এ ব্যাপারে উর্ধতন কর্তৃপক্ষ ভালো বলতে পারবে। ‘
উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আরিফ হোসাইন জানিয়েছেন, মনিরের বিরুদ্ধে হত্যা-মাদক সহ একাধিক মামলা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘ ইয়াবা কারবারিরা দেশ ও জাতির শত্রু। মাদক প্রতিরোধে পুলিশের তৎপরতা অব্যাহত আছে।’
ইয়াবা সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ ভিত্তিহীন-বানোয়াট দাবী করে মুঠোফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন মনির।