কবি ও চিন্তক ফরহাদ মজহার বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে বলেছেন, ছাত্ররা রাজনীতি করবেনা, এ ধরনের ননসেন্স কথা বলবেন না।
শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজার পাবলিক লাইব্রেরির শহীদ সুভাষ হলে অনুষ্ঠিত “গণ সার্বভৌমত্ব ও নতুন রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী গঠন: প্রেক্ষাপট বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনীতি” শিরোনামে এক মুক্ত সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ফরহাদ মজহার।
এসময় ফরহাদ মাজহার বলেন, মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী সংবিধান হলো ৭২ এর সংবিধান। সমাজতন্ত্র ও জাতীয়তাবাদকে একসাথে ফ্যাসিস্ট বলে। গণতন্ত্র রাষ্ট্র মানেই ধর্মনিরপেক্ষতা। দিল্লীর পক্ষে ইসলাম নির্মূল করার জন্যই ৭২ এর সংবিধান রচিত হয়েছিলো।
৭২ এর সংবিধান বাতিল করতে হবে মন্তব্য করে এই কবি ও চিন্তক বলেন, এটা বাতিল করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে পুণপ্রতিষ্ঠা করা। ৭২ এর সংবিধানের পক্ষের লোক হলো দিল্লীর, বিরোধীরা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে তিনি আরো বলেন, আপনারা জিয়াউর রহমানের বিরোধী রাজনীতি করতেছেন। যারা সত্যিকারের বিএনপি, তারা দিল্লীর দালাল না, আপনারা সংবিধান বাতিল চান।
“এই গণ অভ্যুত্থান সফল হতোনা যদি খালেদা জিয়া নির্বাচন করবেনে এ নীতিতে অটল না থাকতেন, বিএনপি যদি খালেদা জিয়াকে সম্মান করে তাহলে আজকে ছাত্রদের সাথে এসে দাঁড়ানো উচিৎ”- বলেন ফরহাদ মাজহার।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী রেফারির ভুমিকা পালন করছে। কারন ১/১১ এর অভিজ্ঞতা খারাপ। পুলিশের কাজ সেনাবাহিনী করতে চায়না। তারা ব্যারাকে ফিরতে চায়।
শেখ হাসিনার প্রিয় ছিলো আমলারা মন্তব্য করে ফরহাদ মাজহার বলেন, দেশ কিন্তু আমলারা চালায়। গণ সার্বভৌমত্ব গড়ে তুলতে না পারলে আমলাতন্ত্র ভাঙবেনা।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার।
নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে বিএনপির নির্বাচন চাওয়ার বিষয়টি টেনে এনে তুষার আরো বলেন, আ’লীগ, দিল্লী ও বিএনপির বক্তব্য এক হয়ে যাচ্ছে। যে দিল্লি ৬ মাস আগেও নির্বাচন চায় নাই, তারা এখন বাংলাদেশে নির্বাচনের জন্য উতলা হয়ে উঠেছে। কারণ কোনোনা কোনো ভাবে দিল্লী এখানে গণতন্ত্র চায়না।
সারোয়ার তুষার আরো বলেন, বিএনপি নির্বাচন কেন্দ্রীক কতোবড় ফাঁদে পা দিচ্ছে, সেটা হয়তো তারা এখনো বুঝতে পারছেনা। দিল্লীর অন্তরে আওয়ামীলীগ মুখে বিএনপি। এটা বিএনপিকে বুঝতে হবে।
“জানুয়ারির পরে বাংলাদেশের কেউ বিশ্বাস করেনি আওয়ামী লীগের পতন হবে, কিন্তু ছয় মাস পর ছাত্ররা সেটি ঘটিয়েছে” বলেন তুষার।
ভাব বৈঠকী নামের পাঠচক্র সংগঠনের ওই আয়োজনটির সহ আয়োজক হিসেবে রয়েছে কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স ও জাতীয় নাগরিক কমিটি, কক্সবাজার।
কক্সবাজার কমিউনিটি এলায়েন্স এর সংগঠক মুহিব্বুল মুক্তাদিল তানিম বলেন, বাংলাদেশ কেবল নদীমাতৃক দেশ নয়, এটি সমুদ্রতীরবর্তী দেশও। বঙ্গোপসাগরের নাম যে দেশের নামানুসারে হয়েছে, সেই দেশ একসময় সমুদ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিল। আজকে আমরা সমুদ্রযাত্রায় অগ্রণী ভূমিকা রাখা মানুষের অধিকার, ন্যায্যতার কথা বলতে এসেছি।
এসময় জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য এস এম সুজা উদ্দিন বলেন, লবণ চাষিদের ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করে সরকারি সুরক্ষা ও পরিকল্পনা গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতার সক্ষমতা বৃদ্ধি করা জরুরি। সঠিক নীতিমালা, গবেষণা, এবং ভূ-রাজনৈতিক সুযোগ কাজে লাগিয়ে লবণশিল্পকে রপ্তানিমুখী খাতে রূপান্তর করা সম্ভব, যা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে নতুন দিশা দেখাবে।
এতে আরো বক্তব্য রাখেন, এবি পার্টির সহ সভাপতি জাহাঙ্গীর কাসেম, শহর জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মো. আহমেদ ফেরদৌস, ভাব বৈঠকীর মূখ্য সংগঠক মো. রুমেল।
ভাব বৈঠকীর সংগঠক জাহিন ফারুক আমিন এর তত্ত্বাবধানে সেমিনার সঞ্চালনা করেন তাজওয়ার কাসেম।