সানজিদুল আলম সজীব।
এক সময় সাগরের পানিতে ডুবে থাকা জলাশয় আর লবণের মাঠে এখন সিঙ্গাপুর ও শ্রীলঙ্কাকে ছাড়াতে এ অঞ্চলের ট্রানশিপমেন্ট বন্দর হিসেবে গড়ে তোলা হচ্ছে দেশের একমাত্র গভীর সমুদ্রবন্দর – মাতারবাড়ি। মাত্র বছর ব্যবধানে পুরোপরি পাল্টে যাওয়া একটি জনপদ মহেশখালীর মাতারবাড়ি।
যেখানে গড়ে উঠছে জাপানি বিনিয়োগে বৃহৎ কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রও। আগামী দিনে বাংলাদেশের অর্থনীতির গেম চেঞ্জার হয়ে উঠছে যেন মহেশখালীর এই বন্দরটি।
মাতারবাড়িতে কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্রের কয়লা আনা নেয়ার জন্য খনন করা হয়েছিল ২৫০ মিটার গভীর খাল। পরবর্তী সরকারের দূরদর্শী ভাবনা থেকে খননকৃত পথেই গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে সরকার।যা বর্তমানে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩৫০ মিটার।
গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণের জন্য কাজ করছে চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ। আগামী ডিসেম্বর মাস থেকে ফাস্ট টার্মিনাল নির্মাণের জন্য কাজ শুরু হবে বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
যেখানে থাকবে মাল্টিপারপাস টার্মিনাল ও কনটেইনার টার্মিনাল। প্রথম ফেইসে ২৮৬ একর জায়গায় প্রথম টার্মিনাল নির্মাণ করা হবে। ৫২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত গভীর সমুদ্র বন্দর নির্মাণে সময় লাগবে তিন বছর এমনটি জানিয়েছেন চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষ।
যেটি নির্মিত হলে ভিড়তে পারবে সর্বোচ্চ ১ লক্ষ মেট্রিকটন ওজনের মাদার ভেসেল।
২০২৬ সালের শেষের দিকে এই বন্দর চালু করা হবে বলেও জানান চট্টগ্রাম বন্দর কতৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল মোহাম্মদ সোহায়েল।
এদিকে মাতারবাড়ি কয়লাবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ৩০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দ্বিতীয় ফেইসের বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু হবে ২০২৪ সালের মার্চে অথবা এপ্রিল মাসে।
কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন ডলার সংকটের কারণে কয়লা আমদানিতে প্রভাব পড়তে পারে। তবে জায়কার অর্থায়নে ইতোমধ্যে ১.৭ মিলিয়ন মেট্রিকটন কয়লা আমদানি কাজ প্রক্রিয়াধিন। যার জন্য এই কয়লা শেষ হতে হতে ডলার সংকটের সমাধান হবে।
অত্যাধুনিক এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ৮০ হাজার মেট্রোট্রেনের একটি জাহাজ ১- ২দিনে কয়লা খালাস করবে বলে জানান কোল পাওয়ার জেনারেশন কোম্পানির নির্বাহী পরিচালক।
আগামী ১১ নভেম্বর কক্সবাজার সফরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম ইউনিটের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পর পুরো সক্ষমতার বিদ্যুৎ যুক্ত হবে জাতীয় গ্রিডে।
তার এ সফরেই মহেশখালীর মাতারবাড়িতে ৮৮ হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন এবং ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন হতে যাচ্ছে।
মাতারবাড়ি বিদ্যুৎ প্রকল্প এবং গভীর সমুদ্রবন্দর বাস্তবায়নের জন্য অনেক বড় অবদান রেখেছে যা দক্ষিণাঞ্চলসহ সারাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা সংশ্লিষ্টদের।