সানজিদুল আলম সজীব :
আগামী দিনে দেশের সমৃদ্ধি অর্জনে সমুদ্র সম্পদ নির্ভর সুশীল অর্থনীতি বা ব্লু ইকোনমির উপর জোর দেওয়ার বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
তারা বলছেন, বিশাল সমুদ্র থাকলেও তার দ্বার উন্মোচন এখনো অনেক পিছিয়ে রয়েছে।
শনিবার (২১ অক্টোবর) কক্সবাজার কেন্দ্রীক সুনীল অর্থনীতি বিকাশের লক্ষ্যে যৌথভাবে কক্সবাজার উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ- কউক ও জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) কক্সবাজার আয়োজিত “বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবনা উন্মোচন” শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা উঠে আসে।
বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূ-তাত্ত্বিক গবেষক মোহাম্মদ জাকারিয়া বলছেন, মৎস্য সম্পদ- ট্যুরিজমের পাশাপাশি সমুদ্র থেকে অপার সম্ভাবনার খনিজ সম্পদ আহরণ করা গেলে দেশের অর্থনীতি হবে সবচেয়ে শক্তিশালী। ফলে আয় যেমন বাড়বে তেমনি কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে।
সেমিনারে দেশের সামুদ্রিক পরিবেশ এবং সামুদ্রিক সম্পদ ও তার সুষ্ঠু ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের ভূ-তাত্ত্বিক ওশানোগ্রাফি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মোহাম্মদ জাকারিয়া, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্র বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. কেএম আজম চৌধুরী।
কক্সবাজার উন্নয়ন কতৃপক্ষ চেয়ারম্যান কমোডর নুরুল আবছারের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল।
এসময় কমল বলেন, সঠিক নীতি ব্যবস্হাপনা এবং বিনিয়োগ এর কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা গেলে বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতি ২০৩০ সালের মধ্যে জিডিপিতে বার্ষিক অতিরিক্ত ৬ বিলিয়ন ডলার অবদান রাখতে পারে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অপার সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেয় ।
সেমিনারে সভাপতির বক্তব্যে কউক চেয়ারম্যান কমডোর নুরুল আবছার বলেন বাংলাদেশের বিস্তৃত উপকূলরেখার বঙ্গোপসাগর ব্লু ইকোনমি প্যারাডাইমের মধ্যে অব্যবহৃত সম্ভাবনার ভান্ডার। সমুদ্রের সম্পদের টেকসই ব্যবহারের ওপর কেন্দ্রীভূত হলো সুনীল অর্থনীতি। এটি আমাদের বেড়ে ওঠার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে পুরোপুরি সামঞ্জস্যপূর্ণ। বিশেষ করে আমাদের ক্রমবর্ধমান পর্যটন খাতের প্রেক্ষাপটে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। আমাদের উপকূলীয় অঞ্চল, বিশেষ করে কক্সবাজার, শুধুমাত্র তার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের জন্যই নয়, এর প্রচুর সম্পদের জন্যও বিখ্যাত, আমরা টেকসই পর্যটনের ওপর অনেক ফোকাসসহ আমাদের ব্লু ইকোনমির অপার সম্ভাবনাকে আনলক করতে উদ্ভাবনী কৌশল এবং সহযোগী অংশীদারিত্ব জরুরি।
কউক চেয়ারম্যান আরো বলেন, এই সেমিনারের উদ্দেশ্য হলো- আমরা আমাদের চিন্তা শেয়ার করার জন্য সুনীল অর্থনীতি এবং টেকসই পর্যটনের সঙ্গে সংযুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ এবং চিন্তাশীল নেতৃবৃন্দের একটি বিশিষ্ট প্যানেল সংগ্রহ করা। সহযোগী নেটওয়ার্কিংয়ের ক্ষেত্রে আমাদের সুনীল অর্থনীতি উদ্যোগ এবং পর্যটন শিল্পের জন্য এই সেমিনারসহ বিভিন্ন সেক্টরের স্টেকহোল্ডারদের একসঙ্গে অগ্রসর হওয়ার জন্য সহযোগিতামূলক পথ খোঁজা। উদ্ভাবন এবং বিনিয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে, আমরা আমাদের সামুদ্রিক সম্পদ এবং পর্যটন সম্ভাবনাকে অপ্টিমাইজ করার জন্য কৌশল, দায়িত্বশীল এবং টেকসই উন্নয়নের নীতিগুলিকে অবিচলিতভাবে সমুন্নত রাখা।
এছাড়াও বিশাল সমুদ্রকে ব্যবহার করে সুনীল অর্থনীতির সম্ভাবণাকে কাজে লাগিয়ে জনগণের জন্য আরো সমৃদ্ধ ভবিষ্যত তৈরী করা যেতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।