Saturday, May 18, 2024

৩০ বছর পর হত্যা মামলায় ২ জনের যাবজ্জীবন

সানজীদুল আলম :

কক্সবাজারের উখিয়ার ভালুকিয়া পালং এর আ: হাছানকে হত্যার দায়ে ২ জন আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করা হয়েছে। একইসাথে দন্ডিতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর)
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক (অতিরিক্ত দায়িত্ব) নিশাত সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।

একই আদালতের বেঞ্চ সহকারী দেলোয়ার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।

যাবজ্জীবন কারাদন্ডে দন্ডিত আসামীরা হলো : কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া পালং গ্রামের গুরা মিয়ার পুত্র জয়নাল আবেদীন এবং একই এলাকার এজাহার মিয়ার পুত্র সিরাজুল হক।

রায় ঘোষণার সময় দন্ডিত আসামী জয়নাল আবেদীন আদালতে উপস্থিত ছিলেন। দন্ডিত অপর আসামী পলাতক রয়েছে। মামলায় অপর ৬ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়েছে। ৩ জন আসামী ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করায় রায়ে মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়। ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দীর্ঘ ৩০ বছর পর মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

রাষ্ট্র পক্ষে একই আদালতের অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী, আসামীদের পক্ষে অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ আবদুল্লাহ, অ্যাডভোকেট রাখাল চন্দ্র মিত্র এবং পলাতক আসামীদের রাষ্ট্রের নিয়োজিত অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম-৪ মামলাটি পরিচালনা করেন।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ :

১৯৯৩ সালের ১৯ মার্চ বিকেল ৫ টার দিকে কক্সবাজারের উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের ভালুকিয়া পালং এলাকার আ: হাছান ব্যবসায়িক কাজে ব্যস্ত থাকা অবস্থায় তার উপর কতিপয় দুষ্কৃতকারী দা, লাটি কাঁচি, দেশীয় তৈরি অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আ: হাছান গুরতর আহত হলে তাকে প্রথমে উখিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এবং পরে কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আ: হাছানকে মৃত ঘোষনা করেন।

এ ঘটনায় নিহত আ: হাছানের স্ত্রী মিনু আরা বেগম বাদী হয়ে ১১ জনকে আসামী করে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। যার উখিয়া থানা মামলা নম্বর : ০৩, তারিখ : ২০/০৩/১৯৯৩ ইংরেজি, যার জিআর মামলা নম্বর : ৬৫/১৯৯৩ ইংরেজি (উখিয়া) এবং এসটি মামলা নম্বর : ৮৫/১৯৯৬ ইংরেজি।

বিচার ও রায় :

মামলাটি বিচারের জন্য কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতে ১৯৯৬ সালের ১৬ নভেম্বর চার্জ (অভিযোগ) গঠন করা হয়। মামলায় ৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ, আসামীদের পক্ষে তাদের জেরা, নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন, ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ও আলামত পর্যালোচনা, আসামীদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ, যুক্তিতর্ক সহ বিচারের সকল প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়।

রায় ঘোষণার দিনে কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ প্রথম আদালতের বিচারক নিশাত সুলতানা আসামী জয়নাল আবেদীন ও সিরাজুল হককে ফৌজদারী দন্ড বিধির ৩০২/৩৪ ধারায় দোষী সাব্যস্থ করে যাবজ্জীবন কারাদন্ড প্রদান করেন। একইসাথে দন্ডিতদের প্রত্যেককে ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদন্ড, অর্থদন্ড অনাদায়ে আরো এক বছর করে বিনাশ্রম কারাদন্ড দেওয়া হয়।

অভিযোগ প্রমাণ করতে নাপারায় রায়ে আসামী আবদুস সালাম, রনজিত বড়ুয়া, মোক্তার আহমদ, দুলা মিয়া, জসিম উদ্দিন ও জিনু কান্তি বড়ুয়াকে বেকসুর খালাস প্রদান করা হয়। এছাড়া মামলার ৩ জন আসামী যথাক্রমে কালা মিয়া, ফজলুল হক মিয়া ও নুরুল ইসলাম ইতিমধ্যে মৃত্যুবরণ করায় রায়ে মামলার দায় হতে তাদের অব্যাহতি দেওয়া হয়।

ঘটনা সংঘটিত হওয়ার দীর্ঘ ৩০ বছর পর মামলাটির রায় ঘোষণা করা হয়েছে।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page