Saturday, May 18, 2024

কক্সবাজারে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য: শহরের অর্ধশত পয়েন্ট যেন ছিনতাইয়ের হটস্পট!

সানজীদুল আলম সজীব:

কক্সবাজার শহরের আতঙ্কের আরেক নাম হয়ে দাঁড়িয়েছে ছিনতাইকারী। রাত বাড়ার সাথে সাথে বাড়ে তাদের দৌরাত্ম্যও, চলে ভোর পর্যন্ত। তুলনামূলক মানুষের কম যাতায়াত আছে এমন সড়ক কিংবা অন্ধকারাচ্ছন্ন কোন উপসড়কে ওত পেতে থাকা সশস্ত্র ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ছিনিয়ে নেয় সর্বস্ব। কখনো কখনো মাদকের টাকার জন্য খুনখারাপি করতেও দ্বিধাবোধ করছে না এসব উঠতি বয়সি ছিনতাইকারীরা।

সম্প্রতি শহরের ম্যাজিস্ট্রেট কলোনীর সামনে ছিনতাইয়ের শিকার হন চট্টগ্রাম টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের ছাত্র শেখ সামির ইসলাম। ওই সময় তাকে ছিনতাইকারীরা উপর্যুপরি ১৫—১৬টি ছুরিকাঘাত করে। এছাড়া বাসটার্মিনাল এলাকায় পর্যটকদের রক্ষা করতে গিয়ে ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে রক্তাক্ত হন যুবলীগ নেতা এম এইচ পারভেজ।

ছিনতাইকারীদের এমন ভয়াবহ দাপট ভাবিয়ে তুলেছে শহরবাসীকে। কক্সবাজার বাহাড়ছাড়া এলাকার বাসিন্দা রবিউল ইসলাম জানান, এশার পর থেকে রাত বাড়ার সাথে সাথে কক্সবাজার শহরের বাহারছড়া- মুক্তিযোদ্ধা চত্ত্বর হয়ে মোটেল শৈবাল রোডে যাওয়ার উপসড়ক , বাহারছড়া এলাকায় ঢোকার সড়কগুলোতে সড়কবাতি থাকে না বেশির ভাগ সময়ই। যার কারণে উক্ত জায়গাগুলো হয়ে উঠেছে ছিনতাইয়ের হটস্পট । এসব জায়গায় পৌরসভার সড়ক বাতি সহ পুলিশি নিরাপত্তা জোরদারের দাবি জানান তিনি।

পাশাপাশি নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাহারছড়ার আরেক বাসিন্দা জানান, পুলিশ সুপারের বাসভবনের মোড় হতে রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে আসার সড়কটিও চরম ছিনতাই প্রবন। এ সড়কটিও বেশিরভাগ সময় থাকে অন্ধকারাচ্ছন্ন।

পাশাপাশি বাসটার্মিনাল হতে কলাতলী ডলফিন মোড় পর্যন্ত সড়কটিও হয়ে উঠেছে চরম ঝুঁকিপূর্ণ । রাত বাড়ার সাথে সাথে নির্জন এই সড়কের আশপাশের এলাকাগুলো হয়ে উঠছে ছিনতাইকারীদের নিরাপদ আস্তানা।

অন্যদিকে বাসটার্মিনাল হতে বিজিবি ক্যাম্প এই এক কিলোমিটার সড়ক এলাকায়ও বিরাজ করে একটি সংঘবদ্ধ ছিনতাইকারী দল। যাদের মূল টার্গেট মোটরসাইকেল আর টমটমের যাত্রীরা।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের জানুয়ারীতে বাস টার্মিনাল টমটমের গ্যারেজে যাওয়ার পথে বিজিবি ক্যাম্পের আগে আমগাছ তলা নামক এলাকায় ছিনতাইকারী ছুরিকাঘাতে মিজান নামের এক টমটম চালক নিহত হন।

পাশাপাশি কক্সবাজার শহরের অর্ধশত জায়গায় প্রতিনিয়তই ঘটছে ছিনতাইসহ ছুরিকাঘাত এবং খুনের ঘটনা।

এসব ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চরম গাফিলতিকেই দুষছেন সচেতনতা মানুষেরা। ঘটনার পর ছিনতাইকারীদের আটক করলেও এসব ঘটনা ঘটার আগে ব্যবস্থা না নেয়ায় এমন পরিস্থিতি বলে জানান তারা।

অন্যদিকে পুলিশ জানায় পেশাদার ছিনতাইকারীদের আইনের আওতায় আনলেও জামিনে বের হয়ে পুনরায় ছিনতাইসহ নানা অপরাধে জড়িয়ে পড়ছে তারা।

সম্প্রতি ম্যাজিস্ট্রেট কলোনীর সামনে ছিনতাইয়ে জড়িত তিনজনকে আটকের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন তথ্য দেন সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো: রফিকুল ইসলাম।

অন্যদিকে পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা জানান দ্রুত এসব বিষয়ে জোরদার পদক্ষেপ না নিলে ক্রমেই অনিরাপদ হয়ে উঠবে পর্যটন শহর।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page