নিজস্ব প্রতিবেদক:
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, ক্রীড়া সংগঠক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব শহীদ শেখ কামালের ৭৪তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আলোচনা সভা, দোয়া ও মিলাদ মাহফিল করেছে কক্সবাজার পৌর ছাত্রলীগ।
শনিবার (০৫ আগস্ট) বিকেলে লালদিঘীর পাড়ের জেলা আওয়ামীলীগের দলীয় কার্যালয়ে পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি হাসান তারেকের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মনিরুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি এস এম সাদ্দাম হোসাইন।
তিনি বলেন, অত্যন্ত মেধাবী শেখ কামাল ছিলেন দূরদর্শী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক সংগঠক। একজন মেধাবী ও প্রতিভাবান ব্যক্তি শেখ কামালের জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে সকল তরুণ ছাত্রসমাজকে বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত থাকতে হবে।
বাংলার তরুণ ছাত্রসমাজ শেখ কামালের জীবন থেকে অনুপ্রেরণা আর উৎসাহ হয়ে সামনে এগিয়ে যাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন ।
সভায় জেলা, উপজেলা ও পৌর ছাত্রলীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।
সভা শেষে শহীদ শেখ কামাল সহ ১৫ আগস্টে শাহাদাৎ বরন করা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরিবারের সদস্যের আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাত করেন লালদিঘির পাড় জামে মসজিদের ইমাম মওলানা রিদুয়ান।
পরে শহীদ শেখ কামালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন উপস্থিত ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
বঙ্গবন্ধুর বড় ছেলে শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত কর্মী ছিলেন। এই সংগঠনের সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী হিসেবে ’৬৯-র গণঅভ্যুত্থান ও ’৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা পালন করেন।
১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক স্মৃতি-বিজড়িত ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক বাসভবনে আক্রমণ করার ঠিক আগে আগে বাড়ি থেকে বের হয়ে তিনি সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিতে চলে যান
তিনি স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন্ড লাভ করেন ও মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। তিনি ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সদস্য ছিলেন।
শেখ কামাল শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক এবং ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ (অনার্স) পাস করেন।
তিনি ছায়ানটের সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণে থিয়েটার আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথম সারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয়শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন।
শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। তিনি নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সঙ্গে নিয়মিত অনুশীলন করতেন।
হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার মাত্র একমাস আগে ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই খ্যাতিপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়। ওই সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।