শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, ঈদগাঁও :
কক্সবাজারের ঈদগাঁও উপজেলার ইসলামপুর ইউনিয়নে হাজী সল্ট নামের এক লবণ মিলে অভিযান চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ইয়াবা উদ্ধারের গুঞ্জন উঠেছে। যদিও পুলিশ বলছে আটককৃতরা মাদক সেবী, তাদের কাছ থেকে ৪০ পিস ইয়াবা এবং সেবনের সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে ।
এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ধর্মের ছড়ার জাফর হাজীর ছেলে ইসমত আলী ভুট্টোসহ তিনজনকে আটক করেছে থানা পুলিশ। আটককৃতদের মধ্যে একই এলাকার তারেকুর রহমান ও রবিউল ইসলাম নামের দুইজন রয়েছে।
৮ জুলাই শনিবার দিবাগত রাতে উপজেলা লবণ শিল্প এলাকার হাজী সল্ট নামের একটি মিলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের ধৃত করে বলে জানান স্থানীয়রা।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গভীর রাতে মাদক সেবনের সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় থানা পুলিশ। পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে কয়েকজন ইয়াবা পাচারকারী চক্রের সদস্য পালিয়ে যায়। মিলটি ঘেরাও করে ভু্ট্রো, তারেক, রবিউলকে হাতে নাতে আটক করে। পরে তাদের হেফাজত থেকে ৪০ পিস ইয়াবা উদ্ধার করে বলে জানায় পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, তাদের প্রথমে আটক করা হয় হাজী সল্ট নামের মিল থেকে, পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী বাড়িঘরে মজুদ করে রাখা প্রায় লক্ষাধিক পিস ইয়াবা উদ্ধার করে।
এদিকে স্থানীয় কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আটককৃতরা এলাকার চিহ্নিত ইয়াবা পাচারকারী। তারা ইতিপূর্বে বিভিন্ন স্থানে আটক হয়ে কারাভোগ করছিল। এদিন রাতে লবণ বোঝাই ট্রাক যোগে পাচারের উদ্দেশ্য মজুদ করে রাখছিল প্রায় ১ লাখ পিস ইয়াবা। ধারণা করা হচ্ছে বিপুল পরিমাণ ইয়াবার সংবাদ পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় পুলিশ। সচেতন মহলের মতে, অনেক সময় মাদক সেবনের সংবাদ পুলিশকে জানালেও রহস্যজনক ভূমিকা পালন করে, কিন্তু হাজী সল্টে অভিযানের চিত্র ভিন্ন।
ইসলামপুর ইউনিয়নের কয়েকজন ব্যক্তি জানান,এজাহারে ইয়াবার পরিমাণ কম দেখাতে বিপুল পরিমাণ মোটা অংকের টাকার লেনদেন করেছে স্থানীয় প্রভাবশালী এক আওয়ামী লীগ নেতা। তার বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে পুলিশের নাম ভাঙিয়ে বিভিন্ন জনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যে জানা যায়, স্থানীয় আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী এক নেতার নেতৃত্বে এলাকায় একটি মাদক সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। লবণ ব্যবসার আড়ালে মাদক পাচার নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে জানান স্থানীয়রা৷ ক্ষমতাসীন দলের নাম এবং আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করারও অভিযোগ রয়েছে ঐ নেতার বিরুদ্ধে। মাদক পাচার সিন্ডিকেটের আশ্রয় প্রশ্রয়দাতাসহ এ সিন্ডিকেটের সদস্যদের আটক পূর্বক আইনের আওতায় আনার দাবি জানান সচেতন মহল।
ইয়াবা উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া ঈদগাঁও থানার এসআই কাজী মহি উদ্দিন জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে তাদের ধৃত করা হয়। এ সময় ৪০/৪৫ পিস ইয়াবা উদ্ধার করা হয়। সংশ্লিষ্ট মাদক মামলায় তাদের আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা৷