নিজস্ব প্রতিবেদক
পুলিশের নির্দিষ্ট পোশাক পরিবর্তন করে লুঙ্গি ও গামছা পরে মাছ ধরার জেলে সেজে রাতভর সমুদ্র মোহনায় ওঁৎ পেতে ছিল পুলিশ। জাল নিয়ে মাছ ধরছে কেউ উদ্দেশ্য তথ্যের ভিত্তিতে ইয়াবার চালান কব্জা করার। অবশেষে রাত পেরিয়ে ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথে আসে ইয়াবার সর্ববৃহৎ সেই চালান। চকরিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী এমনই এক চৌকস পরিকল্পনা এঁকে অপেক্ষা করেছিলেন রাতভর। জব্দও করেন চকরিয়ার ইতিহাসের সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান।
গত একসপ্তাহ ধরে চালানো তৎপরতার পর সর্ববৃহৎ এই ইয়াবার চালান জব্দ করতে সক্ষম হন বলে জানিয়েছেন চকরিয়া থানার চৌকস অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
পুলিশ জানায়- কক্সবাজারের টেকনাফ থেকে সমুদ্রপথে পাচারের সময় এক চালানেই জব্দ করা হয় ১২ লক্ষ ৫০ হাজার পিস ইয়াবা। প্রতি পিস ইয়াবা ৩০০ টাকা হারে জব্দকৃত এই ইয়াবার বর্তমান বাজারমূল্য ৩ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা। থানার ইতিহাসে এত বড় ইয়াবার চালান আগে কখনো উদ্ধার বা জব্দ করা হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গতকাল রবিবার দিবাগত রাত থেকে আজ সোমবার ভোর পর্যন্ত কক্সবাজার উপকূলের চকরিয়া উপজেলার খুটাখালী ইউনিয়নের পশ্চিমাংশের চকরিয়া-মহেশখালী সমুদ্র চ্যানেলের বহলতলী চিংড়িজোন এলাকায় ইয়াবা উদ্ধারের দুঃসাহসিক এই অভিযান চালায় পুলিশ।
অভিযানে ওসি শেখ মোহাম্মদ আলীর সাথে ছিলেন থানার অপারেশন অফিসার রাজীব কুমার সরকার, এসআই যথাক্রমে জামাল চৌধুরী, কামরুল ইসলাম, এএসআই পারভেজ মাহমুদসহ সঙ্গীয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ।
পুলিশ জানায়- চকরিয়া থানার ইতিহাসে এত বড় ইয়াবার চালান জব্দ করা হয়নি। এবারই প্রথম এই ইয়াবার চালান জব্দ করতে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। ইয়াবাভর্তি প্লাস্টিকের পাঁচটি ড্রাম কেটে একে একে বের করা হয় অত্যাধুনিক মোড়কের ১২৫টি কার্ড বা পোটলা। এসব পোটলার প্রতিটিতে ১০ হাজার পিস করে সর্বমোট ১২ লক্ষ ৫০ হাজার পিস ইয়াবার চালান জব্দ করা হলো।
এত বড় ইয়াবার চালান জব্দের একমাত্র কারিগর চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘গত একসপ্তাহ ধরে ইয়াবার এই চালান জব্দ করার জন্য পুলিশের চোখে ঘুম ছিল না। গোপন সোর্সের দেওয়া তথ্য শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর রবিবার দিবাগত রাত থেকে পুলিশের বিপুল সংখ্যক সদস্য মাছ ধরার জেলে সেজে সমুদ্র উপকূলের চকরিয়া অংশের খুটাখালীর বহলতলী চিংড়িজোন এলাকায় ওঁৎ পেতে থাকে। এতে পরদিন সোমবার ভোরে আসে ইয়াবার সেই চালান।
এ ব্যাপারে চকরিয়া সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারি পুলিশ সুপার এম এম রকীব উর রাজা বলেন, ‘সর্ববৃহৎ ইয়াবার চালান পাচারের ঘটনায় কারা জড়িত রয়েছে, তাদের ব্যাপারে ব্যাপক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। পুলিশের তৎপরতায় ইয়াবাভর্তি ট্রলার ফেলে যারা পালিয়েছে তাদেরকে আটকের চেষ্টা চলছে। এ ব্যাপারে চকরিয়া থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা রুজুর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।