শাহিদ মোস্তফা শাহিদ
আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের সাধারণ নির্বাচন হবে সেয়ানে সেয়ানে। এমনটাই দাবি করছে সাধারণ ভোটাররা।
স্থানীয়রা বলছে, ৬ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীর মধ্যে সবাই হেভিওয়েট। সবারই রয়েছে স্ব স্ব পরিচিতি ও আলাদা আলাদা ভোট ব্যাংক। ফলে পরবর্তী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান কে হতে যাচ্ছে এখনো বুঝে উঠতে পারছে না ইউনিয়নের জনগণ ।
খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, এবারের চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ নুর ছিদ্দিক, সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল হক, তরুণ সমাজ সেবক ও রাজনীতিবিদ লুৎফুর রহমান আজাদ,৩নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাইফুল ইসলাম ও ২নং ওয়ার্ডের মেম্বার আবদু রাজ্জাক ও সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আলমের ছেলে এ্যাডভোকেট আনোয়ার পারভেজ।
সরেজমিনে ইউনিয়ন ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে এমন তথ্য। গতকাল অসংখ্য ভোটারদের সঙ্গে কথা হয়।তারা বলেন, এবারে ইসলামাবাদ ইউনিয়নে যে ৬ জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রয়েছে সবাই গ্রহণযোগ্য, স্ব স্ব পরিচয়ে পরিচিত। তারা বলেন, ইউনিয়নের ৫-৬ নং ওয়ার্ড থেকে সাবেক চেয়ারম্যান জাফর আলমের ছেলে এ্যাডভোকেট আনোয়ার পারভেজ প্রার্থী হওয়ায় অন্য ৫ প্রার্থীর জন্য গলার কাঁটা হয়ে দাড়িয়েছে।কারণ এ দু’টি ওয়ার্ডে ভোটারদের ভোটে পরিবর্তন হতো ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। এবারে অন্য প্রার্থীরা ৫/৬ নং ওয়ার্ডের ভোটের আশা করলেও অধিকাংশ ভোট যাবে আনোয়ার পারভেজ রুবেলের ব্যালেটে, যার ফলে হিসাব নিকাশ বদলে গেছে অনেকটা।
জানা যায়, বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ নুর ছিদ্দিক ৮ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন সময়ে ইউনিয়নে অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধিত করেছে। সে হিসেবে তিনি পূনরায় নির্বাচিত হতে মাঠে রয়েছে।তার সমর্থকরা জানান, পুরো ইউনিয়নে তার ভোট রয়েছে। মোঃ নুর ছিদ্দিক ২০১৬ সালে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিল। রাজনৈতিকভাবে তিনি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। ভোটারেরা জানান, নুরুল হক সাবেক চেয়ারম্যান, ২০১১ সালে নির্বাচিত হয়ে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালনকালে দ্রুত নাগরিক সেবা পৌঁছে দেয়ায় বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। ২০১৬ সালের নির্বাচনে মোঃ নুর ছিদ্দিকের কাছে পরাজিত হন নুরুল হক। কিন্তু তার কয়েকটি ওয়ার্ডে ভোট ব্যাংক থাকায় অনেকটা সুবিধাজনক অবস্থানে বলে জানান স্থানীয়রা। স্থানীয়দের মতে, নুরুল হকের সঙ্গেই প্রতিদ্বন্দ্বিতা হতে পারে অন্য প্রার্থীদের। রাজনৈতিকভাবে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত আছে।
এদিকে তরুণ সমাজ সেবক হিসেবে ব্যাপক জনসমর্থন রয়েছে লুৎফুর রহমান আজাদের। দীর্ঘ রাজনীতি, সমাজসেবা মূলক কর্মকান্ডে জড়িত থাকায় তারও ভোট ব্যাংক রয়েছে পুরো ইউনিয়নে। ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে তাঁকেও নির্বাচিত করতে পারে ইউনিয়নের জনগণ। রাজনৈতিকভাবে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ছিলেন জেলা যুবলীগের মতো সংগঠনের নেতা।
অনুরূপভাবে বর্তমান ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম মেম্বারেরও রয়েছে বেশ জনপ্রিয়তা। তিনি ৩নং ওয়ার্ড থেকে দুইবারের নির্বাচিত মেম্বার। আওয়ামী লীগ নেতা হিসেবে পুরো ইউনিয়নে চষে বেড়িয়েছেন সাইফুল ইসলাম। তারও প্রতি ওয়ার্ডে ভোট রয়েছে বলে দাবি করেন তার সমর্থকরা।
অন্যদিকে ভোট যুদ্ধে আজ পর্যন্ত আবদু রাজ্জাকও এগিয়ে আছেন বলে দাবি করেন তার অনুসারীরা। রাজ্জাক ইসলামাবাদ ইউনিয়ন পরিষদের ২নং ওয়ার্ডের দুইবারের মেম্বার। ২নং ওয়ার্ডটি তার দূর্গ হিসেবে বেশ পরিচিত। তাছাড়াও প্রতিটি কেন্দ্রে বিপুল ভোট রয়েছে বলে জানান তার অনুসারীরা। আবদু রাজ্জাক আওয়ামী লীগের রাজনীতির পাশাপাশি বিভিন্ন সমাজসেবা মূলক কাজে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছে।
তবে সব প্রার্থীদের গলার কাঁটা হয়েছে তরুণ আইনজীবী আনোয়ার পারভেজ রুবেল। তার প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর অন্য ৫ প্রার্থীর ঘুম হারাম। কেননা আনোয়ার পারভেজের বেড়ে উঠা ৫-৬ নং ওয়ার্ডে তার বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। সে প্রার্থী না হলে ওই দুই ওয়ার্ডের ভোট ভাগাভাগি হতো। সাধারণ ভোটারদের মতে, পুরো ইউনিয়ন থেকে ভোট কাভার করতে পারলে আনোয়ার পারভেজ রুবেল চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়া যায়না।
নিবার্চন অফিস সূত্রে জানা যায়, এবারে ইসলামাবাদ ইউনিয়নে ভোটার সংখ্যা ২০.৩৯১ জন। তৎমধ্যে পুরুষ – ১১১১৯,নারী – ৯২৭২ ভোট। ৯ কেন্দ্রে ৫৪ টি কক্ষে আগামী ২৮ এপ্রিল সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হবে।
আগামীকাল প্রকাশ হবে ঈদগাঁও ইউনিয়নের হালচাল।