নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশের দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ঘেঁষা সীমান্ত উপজেলা টেকনাফ। সেই সীমান্ত থেকে পায়ে হেঁটে হজে যাওয়ার সংকল্প করেছেন শিক্ষক জামিল। ছোটকালের লালিত স্বপ্ন প্রৌঢ়বয়সে পূরণ করছেন তিনি। এ জন্য তিনি গত কয়েক বছর ধরে ১৫-২০ কি.মি হাঁটার অনুশীলন চালিয়ে গেছেন তিনি। বয়স ৫০ হতে আর দুই বছর বাকি। এর মধ্যেই তাঁর ইচ্ছে পায়ে হেঁটে মক্কা গিয়ে কাবা তাওয়াফ করবেন তিনি। হাঁটার অনুশীলনের পাশাপাশি তিনি কাগজপত্রও ক্লিয়ার করেছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট দূতাবাস থেকেও ক্লিয়ারেন্স নিয়েছেন তিনি। জানালেন, ‘ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল পায়ে হেঁটে সৌদি আরব যাওয়ার। এজন্য বিগত কয়েক বছর ধরে দৈনিক ১৫-২০ কিলোমিটার পায়ে হাঁটাহাটির অনুশীলনও করে আসছিলাম।’
নিজেকে সম্পূর্ণ প্রস্তুত করেই ২০২৩ সালের শনিবার (১৭ ডিসেম্বর) টেকনাফ জিরো পয়েন্ট অলিয়াবাদ জামে মসজিদে ফজরের নামাজ আদায়ের পর তার মরহুম বাবা-মায়ের কবর জিয়ারত শেষে জিরো পয়েন্টে থেকে রওনা হয়েছেন বলে জানান। সাড়ে তিন মাসে তিনি ইরান পৌঁছেছেন।
বুধবার (২৭ মার্চ) এক ক্ষুদে বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি ভারত হয়ে পাকিস্তান, সেখান থেকে এখন ইরানে অবস্থান করছেন। এরপর তিনি সংযুক্ত আরব আমিরাত হয়ে সৌদি আরবে যাবেন। তাকে পুরো পথ পাড়ি দিতে প্রায় আট হাজার কিলোমিটার হাঁটতে হচ্ছে বলেও জানান তিনি। মক্কায় যাওয়া পর্যন্ত পুরো খরচ নিজেই বহন করছেন তিনি।
জামিল বলেন, ১৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে সাতটায় টেকনাফ পৌরসভার জিরো পয়েন্ট থেকে যশোরের বেনাপোলের উদ্দেশ্যে রওনা দেন তিনি। ১১ ফেব্রুয়ারি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেন। এরপর ৩ মার্চ ভারতের ওয়াগ্গা সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে প্রবেশ করেন। ১৯ মার্চ পাকিস্তানের রিমদান সীমান্ত হয়ে ইরানে প্রবেশ করেন। এখন ইরানের বন্দর আব্বাস নামের এক জায়গায় অবস্থান করছেন তিনি। তবে ভারত ও পাকিস্তানে কিছু জায়গায় তিনি গাড়িতে চড়ে পাড়ি দিয়েছেন। হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে পড়ায় তখন এই ব্যবস্থা নিতে হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তাকে স্থানীয় পুলিশ সহযোগিতা করেছে বলে জানান।
মোহাম্মদ জামিল টেকনাফ আইডিয়াল পাবলিক স্কুলে প্রধান শিক্ষক ও টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া পাড়ার বাসিন্দা মরহুম হাজী আবুল হাশেম ও মা আম্বিয়া খাতুনের ছেলে। তিনি ৭ ভাই ৫ বোনের মধ্যে সবার ছোট। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বি এ অনার্স ও এম এ (ইংরেজি)।
এ ব্যাপারে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী বলেন, উদ্যোগটি দুঃসাহসিক। আমি তার সফলতা কামনা করছি।