Sunday, May 12, 2024

প্রধানমন্ত্রীর ঘর টাকা দুটোই পেলেন সৈকতের গায়িকা নুরে জান্নাত

নিজস্ব প্রতিবেদক

নুরে জান্নাত। কক্সবাজার শহরের মেয়ে। বাবার পঙ্গুত্বে পরিবারের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। অতটুকুন মেয়ে কিইবা কাজ করে সংসার চালাবেন! তবে স্রষ্টার দেওয়া প্রতিভাই যেন তার শক্তি সম্বল হয়ে উঠল। সুরেলা কণ্ঠ তার। গান গাইতে শুরু করলেন সৈকতে। পর্যটকদের মনোমুগ্ধকর গান শুনিয়ে যা আয় হতো তা নিয়েই সংসার চালাতে শুরু করেন। অল্পস্বল্প যা পেতো কোন রকম সংসার চলত বাবা-মা সহ পরিবারের ৫ সদস্যের। এরই মাঝে একদিন বেসরকারি টিভি চ্যানেল যমুনার নজরে আসেন নুরে জান্নাত। সেখান থেকেই প্রধানমন্ত্রীর নজর কাড়েন চতুর্থ শ্রেণি পড়ুয়া ছোট্ট নুরে জান্নাত। মুহুর্তেই বদলে গেল নুরে জান্নাতের জীবন। প্রধানমন্ত্রী ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র দেন নুরে জান্নাতকে।

মঙ্গলবার দুপুরে নুরে জান্নাতের পরিবারের হাতে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দেওয়া ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্রের কাগজপত্র তুলে দেন কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহীন ইমরান।

নুরে জান্নাত কক্সবাজার শহরের দক্ষিণ ঘোনার পাড়া এলাকার। নুরে জান্নাতের বাবা মুহাম্মদ ইসলাম ছিলেন একজন দিনমজুর, আর মা গৃহিণী। তিন বছর আগে কাজ করতে গিয়ে এক দুর্ঘটনায় পঙ্গু হয়ে যান বাবা। চলাফেরার শক্তি সামর্থ্য হারিয়ে ফেলেন। নুরে জান্নাত তখন কক্সবাজারের ঘোনার পাড়া কাদেরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ে। বাবা মায়ের দুর্দিনে সংসারের হাল ধরতে সৈকতে গান গাইতে শুরু করে নুরে জান্নাত। মায়ের হাত ধরে প্রতিদিন চলে আসত সৈকতে। স্কুল শেষে বিকেলে কয়েক ঘন্টা গান গেয়ে যা পেত তা নিয়ে চলত সংসার।

নুরের মা সানজিদা ইসলাম বলেন, কোন কোন দিন হাজার দেড়েক, কোন কোন দিন হাজার ১২ শ’টাকা পেত। তা নিয়ে কোন রকম চলতো সংসার। তবে অনেক সময় ঠিকমতো গানও গাইতো পারতো না, নানা বাঁধার কারণে। অল্প কয়েক ঘন্টা যা পারে গায়তো, গান গাওয়া শেষ হলে তাকে নিয়ে সৈকত থেকে বাড়ি ফিরতাম।

গত ২৫ জানুয়ারি নুরে জান্নাতের সেই জীবন জীবিকার খবর প্রচারিত হয় যমুনা টেলিভিশনে। এরপরই তাকে প্রধানমন্ত্রীর তহবিল থেকে দেওয়া হয় ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান পরিবারটির হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে সঞ্চয়পত্রের কাগজপত্র হস্তান্তর করেন।

জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শহীন ইমরান জানান, সংবাদটি প্রচারিত হওয়ার পর তা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নজরে এলে তিনি বিষয়টির খোঁজ খবর নেওয়ার নিদের্শ দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নুরে জান্নাতের মা সানজিদা আক্তারকে ১০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র (তিন মাস অন্তর মুনাফাভিত্তিক) করে দেওয়ার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়।

নুরের মা সানজিদা ইসলাম আরো বলেন, “প্রধানমন্ত্রীকে কিভাবে কৃতজ্ঞতা জানাব তার কোনও ভাষা নেই। সবসময় একটা চিন্তা ছিল কিভাবে আমার মেয়েটি ভালো স্কুলে পড়ালেখার পাশাপাশি গানের চর্চা চালিয়ে যাবে। আল্লাহ আমার সে দোয়া কবুল করেছেন।”

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page