Monday, May 6, 2024

রোজায় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা, কী খাবেন আর কী খাবেন না!

টিটিএন ডেস্ক

বেশি খেলে কিংবা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে কিংবা বেশি তৈলাক্ত খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়
ইফতারি শুরুতে অল্প পরিমাণ খাবার তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ে রাতের খাবার খেয়ে নেয়া ভাল

রমজান হল সংযমের মাস। এ সময় সারাদিন না খেয়ে উপবাস করা হয়। শুধু ইফতার থেকে সাহরি পর্যন্ত খাওয়ার সময় থাকে। ফলে এ সময়ের মধ্যে অনেকেই যা ইচ্ছে; তা-ই খেতে থাকেন। যার ফলে দেখা দেয় বদ হজম বা পেটে গ্যাসের মত সমস্যা
পেটে গ্যাসের সমস্যা কেন হয়
মানবদেহের পাকস্থলীতে প্রতিদিন প্রায় দেড় থেকে দুই লিটার হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরিত হয়, যার কাজ হচ্ছে পাকস্থলীতে খাবার পরিপাক করতে সহায়তা করা। যদি কোনও কারণে পাকস্থলীতে এই হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণ এর মাত্রা বেড়ে যায়, তাহলে পাকস্থলীর অভ্যন্তরীণ আবরণ তথা মিউকাস মেমব্রেনে প্রদাহ তৈরি হয় যাকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় গ্যাসট্রাইটিস বলে।
অতিরিক্ত খাবার খেলে কিংবা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে কিংবা বেশি বেশি তৈলাক্ত খাবার খেলে গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা হয়ে থাকে।
রোজার শুরুতে স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে যা করা উচিত
গ্যাস্ট্রাইটিস এর উপসর্গ
১.পেটের উপরি অংশে ব্যাথা হবে।
২.বুক জ্বালাপোড়া করবে।
৩. খাবারের আগে পরে পেট ব্যাথা হতে পারে।
৪.খাবার এর সময় বুকে বাঁধ পড়ার মত অনুভব হবে।
৫. ঢেকুর আসবে।
৬. বমি বমি ভাব থাকবে, এবং খাবারের চাহিদা কমে যাবে।
৭. অল্প খাবারেই পেট ভরে গেছে মনে হবে।

ইফতারির সময় যা করণীয়

১. পেটে গ্যাসের সমস্যা কমাতে চাইলে ইফতারিতে অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার যেমন পেয়াজু, আলুর চপ, বেগুনি, চিকেন ফ্রাই, জিলাপি ইত্যাদি যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে।
২. একসাথে অনেক বেশি খাবার না খাওয়াই শ্রেয়। অনেকে ইফতারিতে বসে গপাগপ খেতে থাকেন। এটা কিছুতেই করা যাবে না।
৩. ইফতারিতে ইসুপগুলের শরবত, ডাবের পানি, ইত্যাদি খাওয়া যাতে পারে আর শর্করা জাতীয় খাবার যথা খেজুর, পেয়ারা, ছোলা, সেমাই ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে।
৪. ইফতারি শুরুতে অল্প পরিমাণ খাবার তারপর মাগরিবের নামাজ পড়ে রাতের খাবার খেয়ে নেয়া ভাল। সম্ভব হলে তারাবীর নামাজের আগেই খেয়ে নিতে হবে।তাহলে খাবারের পরে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে নামাজ পড়তে গেলে নামাজের সময় এক প্রকার ব্যায়াম হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে খাবার পরিপাকে সহায়ক হবে পাশাপাশি এসিডিটির ঝুঁকি কমে যাবে।
৫. রোজার মাসে পেটে গ্যাসের সমস্যা থেকে বাঁচার জন্য রাতের খাবার কিংবা সেহরি দুটোই ঘুমানোর ১ ঘণ্টা আগে শেষ করতে হবে এবং খেয়ে অবশ্যই কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে তারপর ঘুমাতে হবে। অন্যথায় অ্যাসিডের ব্যাক ফ্লো হয়ে GERD এর মত রোগ হতে পারে।
৬. টক জাতীয় ফলে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি থাকলেও সাইট্রিক অ্যাসিডও থাকে। তাই রোজার সময় টক জাতীয় ফল সাবধানতার সাথে খেতে হবে। ভাল হয় রাতের খাবার শেষ করে ভরা পেটে খেলে।
সন্তানকে রোজা রাখার জন্য উৎসাহ দেবেন যেভাবে
৭. ঝাল খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয় তাই কাচা মরিচ কিংবা অতিরিক্ত ঝাল খাবার পরিহার করে চলতে হবে।
৮. রোজার সময় চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করে চলা উচিত এতে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে এবং পাকস্থলীতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড ক্ষরণের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।
সাহরিতে যা করণীয়
১. সাহরির খাবারেও এমন সব খাবার পরিহার করা উচিত যা পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটি করে। যেমন চর্বি জাতীয় খাবার, অতিরিক্ত তেলে ভাজা খাবার, চা কফি ইত্যাদি।
২. সাহরি সম্পন্ন করার পর কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে তারপরে ঘুমাতে যাওয়া ভালো। এতে শরীর ভালো থাকবে এবং গ্যাসের সমস্যা হবে না।
৩. সাহরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়া ভালো।
৪. যাদের অ্যাসিডিটির সমস্যা কিংবা গ্যাস্ট্রিক রোগ রয়েছে তারা চিকিৎসকের পরামর্শক্রমে গ্যাস্ট্রিক এর ঔষধ খেতে পারেন এবং রোজা রাখতে পারবেন।
৫. অল্প পরিমাণে ভাত-রুটি, শাক-সবজি, ডিম, দুধ, মাংস ইত্যাদি খাবার সাহরিতে খেতে পারেন। তবে অবশ্যই তেল-মশলা কম ব্যবহার করে রান্না করবেন।
৬. সাহরিতেও ঝালজাতীয় খাবার খাবেন না। এমন খাবার পাকস্থলীতে অ্যাসিডিটির পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page