Friday, May 17, 2024

নেই অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা,চরম ঝুঁকিতে ঈদগাঁও বাজার

শাহিদ মোস্তফা শাহিদ, ঈদগাঁও:

দেশের বিভিন্ন স্থানে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু কক্সবাজারের দ্বিতীয় বাণিজ্যিক কেন্দ্র ঈদগাঁও বাজারের ব্যবসায়ীরা এ বিষয়ে যেন একেবারেই উদাসীন। ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের নিচে যুগের পর যুগ চোখ বুজে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তারা।শুধু তাই নয়, ফুটপাত ও সড়ক দখল করে ব্যবসা চালাতেও কার্পণ্য করছেন না কেউ কেউ । মার্কেট গুলোর সরু সরু গলিপথ এমনভাবে তারা আগলে রেখেছেন যে, কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে অ্যাম্বুলেন্স বা ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি সময় মতো ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার তৎপরতাও চালাতে পারবে না।ঝুঁকিপূর্ণ এসব বাণিজ্যিক ভবনে অগ্নিনির্বাপণ বিধিমালা অনুযায়ী ফায়ার এক্সিট, ফায়ার অ্যালার্ম, স্মোক ডিটেক্টরের (ধোঁয়া শনাক্তকরণ যন্ত্র), সেফটি ট্যাংকও নেই।

এছাড়া ঈদগাঁও বাজারসহ বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমল ও বিপণি বিতান গুলোতে নিজস্ব অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনায় কনটিনজেন্সি প্ল্যান রাখা জরুরি হলেও তা রাখা হয়নি।

ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, বিগত ১৫ বছরে ঈদগাঁও বাজারে ২০ বারের মতো ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে।এসব ঘটনায় কোটি কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। সর্বশেষ শাহ ফকির বাজারে কয়েকটি ফার্নিচারের দোকানে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এর আগে বাসস্ট্যান্ডের পপুলার ফার্মেসীর পিছনে আগুন লেগে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।বার বার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও সচেতন হচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা।ঈদগাঁও বাজারের বিভিন্ন মার্কেট, শপিংমল, বিপণি বিতান ও বড় বড় ডিপার্টমেন্টাল স্টোরের অগ্নিনিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে রামু ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন।

এ স্টেশনের স্টেশন কর্মকর্তা সোমেন বড়ুয়া বলেন, অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধ, প্রতিকার ও নির্বাপক ব্যবস্থায় যা যা প্রয়োজন, ঈদগাঁও বাজারের মার্কেট গুলোতে তার কোনোটাই নেই বললেই চলে। শিগগিরই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে বসে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনগুলোতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে দেয়া হবে।অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারের তাগাদাসহ গণসচেতনতা বৃদ্ধি করা হবে।

তিনি আরো বলেন, রামু উপজেলা নিয়ে কাজ করতে গিয়ে ঈদগাঁও উপজেলায় সময় কম দেয়া হয়েছে। সারাদেশে ফায়ারসার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সকে নির্দেশনা দিয়েছে আদালত। ঝুঁকিপূর্ণ স্থাপনা, আবাসন নির্মাণপ্রতিষ্ঠান গুলোর কার্যক্রম স্থগিত করতে নোটিশ জারি করা হবে।

ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বলেন, স্টেশন, ডিসি রোড,জাগির পাড়া সড়ক, বাঁশঘাটা সড়ক, তরকারি বাজার, মাছ বাজার, হাসপাতাল সড়ক, প্রধান কাপড়ের গলি, স্বর্ণের দোকান গলি, পাইপ বাজার, শহীদ মিনার সড়ক, স্কুল গেইট হয়ে তরকারি বাজার, কবিরাজ সিটি, নুর এ ছকিনা মার্কেটের একাংশ ও তরকারি বাজার রোড অগ্নিকাণ্ডের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। পায়ে চলা পথের মাধ্যমে একটি মার্কেট আর একটি মার্কেটের সঙ্গে সংযুক্ত। এসব পথে একজন হাঁটলে আর একজনের হাঁটার জায়গা থাকে না।ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আরো বলেন , এসব মার্কেটে ঢোকার পথ সরু। দিনরাত রাস্তার দুই ধারে ভিড় করে থাকেন হকার ও ক্রেতারা। বেশির ভাগ পুরোনো মার্কেটের বাইরেই এমন দৃশ্য। এই ভিড় ঠেলে ভেতরে যেতে বেগ পেতে হয়। তাছাড়া মার্কেটগুলোর মধ্যে কোনো পানির ব্যবস্থা রাখা হয়নি। সে কারণে কোনো ধরনের দুর্ঘটনা ঘটলে তার ব্যাপক পরিধিও হতে পারে। অগ্নিকাণ্ডের দুর্ঘটনা প্রতিরোধে ব্যবসায়ীদের সবার আগে সচেতন হতে হবে।সূত্র মতে,ঈদগাঁও বাজারসহ এর আশপাশে ছোট-বড় ব্যাংক বীমা, সরকারি প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানসহ পাঁচ হাজারের অধিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব ধরনের পোশাক, ওষুধ, পণ্য ও খাদ্যদ্রব্য পাইকারি বেচাকেনার পাশাপাশি খুচরা বিক্রি হয়। যে কারণে ঈদের বাজারে লাখো মানুষের যাতায়াত হয় এই বাজারে।এ বিষয়ে বাজার পরিচালনা পর্ষদের সহ সভাপতি রায়হান আমিন বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের সবসময় সতর্ক করে আসছি। বিদ্যুতের শর্টসার্কিটের বিষয়সহ অগ্নিনির্বাপণ যন্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ প্রদান করতে বাজার পরিচালনা পর্ষদের সবাইকে নিয়ে মিটিং বসে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ

You cannot copy content of this page