শামীমুল ইসলাম ফয়সাল :
বেইলি রোডের আগুন তখন ভয়ানক হয়ে উঠছে, কে জানত মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়া লেলিহান শিখায় নিঃশেষ হবে অনেকগুলো জীবন।
খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয়ার আগে মেয়ে ও স্ত্রী নিয়ে রাতে খাবার খেতে যাওয়া উখিয়ার শাহজালাল কাচ্চি ভাইয়ের স্টোর রুমের মেঝেতে কাতরাচ্ছিলেন।
ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেন কিন্তু তিনি সাড়া দেননি। প্রিয়তমা স্ত্রী ও আদরের কন্যাকে বুকে আগলে রেখে পরিবার নিয়ে পাড়ি জমান না ফেরার দেশে।
অশ্রুসিক্ত নয়নে হৃদয়বিদারক এই ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন কাস্টমস কর্মকর্তা শাহজালালের বড় ভাই হলদিয়া পালং ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ জাহান সাজু।মৃত্যুর তিনদিন পর রবিবার সকালে শাহজালালের জন্মস্থান উখিয়ার মরিচ্যায় অনুষ্ঠিত জানাজায় অংশ নেন হাজারো মানুষ, সুখী এক পরিবারের এমন করুণ পরিণতিতে বাকরুদ্ধ সবাই। জানাজার পর পারিবারিক কবরস্থানে তিনজনকে পাশাপাশি দাফন করা হয়।একেবারে পশ্চিমপাশে কবর দেওয়া হয় শাহ জালাল উদ্দিনকে, তাঁর ঠিক পাশে মধ্যখানে কবর দেওয়া তাঁর স্ত্রী মেহেরুন নেছা জাহান হেলালী মিনাকে, মায়ের পাশেই পূর্বদিকে তাঁদের ছোট্ট সোনামণি সাড়ে তিন বছরের কন্যা ফাইরুজ কাশেম জামিরাকে দাফন করা হয়।
শাহ জালালের শ্বশুর রামুর ফতেখাঁরকুলের বাসিন্দা প্রকৌশলী মোক্তার আলম হেলালী কান্না জড়িত কন্ঠে মর্মান্তিক এই ঘটনাকে হত্যাকান্ড উল্লেখ করে; সুষ্ঠু বিচার দাবী করেন। একই দাবী জানান নিহত শাহ জালালের বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা ডাক্তার আবুল কাশেম।
জানাজায় নিহতদের স্বজন-বন্ধু, জনসাধারণ সহ অংশ নেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি, উখিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির চৌধুরী, হলদিয়া পালং ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল কায়েস চৌধুরীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
ছোটবেলা থেকেই কখনো কোনো বিবাদে জড়াননি শান্ত স্বভাবের শাহ জালাল। তার অকাল মৃত্যু এলাকাবাসীর কেউই মেনে নিতে পারছেন না।নিহত শাহ জালাল কেরানীগঞ্জের পানগাঁতে সহকারী কাস্টমস কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলেন।