বিশেষ প্রতিনিধি
নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের অদূরে মিয়ানমারের ওপারে অবস্থিত দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিপির তুমব্রু রাইট ক্যাম্প।
বাংলাদেশ প্রান্তের সীমান্ত সড়কে দাঁড়ালেই আরকান পর্বতমালার একটি টিলায় থাকা সবুজ শামিয়ানাবৃত এই ক্যাম্পটি দেখা যায়।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য বলছে, এই ক্যাম্প ও পার্শ্ববর্তী ঢেঁকুবনিয়া সীমান্তচৌকি ছাড়া সীমান্তের ৪৮ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে থাকা মিয়ানমারে ভূখন্ডে বিজিপি নিয়ন্ত্রিত প্রায় সবকটি চৌকি দখল করেছে রাখাইন প্রদেশের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি।
জাতিগত বিদ্রোহীদের জোট থ্রি ব্রাদারহুড এলায়েন্সভুক্ত এই গোষ্ঠীটি, সীমান্ত কূটনীতি সহ নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ রাইট ক্যাম্প নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে বিজিপির সাথে তুমুল সংর্ঘষে জড়িয়েছে।
দুইদিন বন্ধ থাকার পর শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ২ টা ৪৫ মিনিট থেকে সীমান্ত এলাকার এপারের গ্রামগুলোতে শোনা যেতে শুরু করে সংঘর্ষে গুলাগুলির শব্দ।
রবিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৪ টার পর থেকে অব্যাহত এই সংঘর্ষের তীব্রতা বাড়ে, থেমে থেমে ভারী অস্ত্রের শব্দে কেঁপে উঠছে আশপাশ।
মিয়ানমার প্রান্ত থেকে কয়েকটি বুলেট ও মর্টারশেলের অংশ বাংলাদেশের ভূখণ্ডে এসে পড়েছে, প্রবীন্দ্র ধর অম্ভু নামে এক বাংলাদেশি ডান হাতে গুলি লেগে আহত হয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়নের হিন্দু পাড়ার এই বাসিন্দা
স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বলে জানা গেছে।
বিদ্রোহীদের তোপের মুখে এখন পর্যন্ত মিয়ানমার বিজিপির ৫৬ সদস্য প্রাণভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছেন , বিজিবি ক্যাম্পে যাদের আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
সংঘর্ষের কারণে পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ ও সীমান্তবর্তী কয়েকটি সড়কের যানবাহন চলাচল নিয়ন্ত্রণ করার ঘোষণা দিয়েছে বান্দরবান জেলা প্রশাসন।
স্থানীয় লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়ায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ্ মোজাহিদ উদ্দিন।
বন্ধ বিদ্যালয়গুলো হলো- ভাজাবুনিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাইশফাঁড়ি প্রাথমিক বিদ্যালয়, তুমব্রু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও দক্ষিণ ঘুমধুম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
জেলাপ্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত লাগোয়া সড়কগুলোতে প্রাইভেট কার না নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে একই সাথে গণপরিবহন চলাচলও সীমিত করা হয়েছে।