ঢাকা ০৫:২২ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
সংঘবদ্ধ ধর্ষণের মুলহোতা বাবু আটক: বাকীদের খুঁজছে পুলিশ চুপ প্রশাসন, নিষেধাজ্ঞা না মেনে আতশবাজি ফুটল সৈকতে বার্মিজ মার্কেট এলাকার বাসিন্দা বকুল আর নেই: জানাজা বৃহস্পতিবার ভালো কিছু শুরুর আশা পঁচিশের শেষ সূর্যাস্ত দেখতে আসা পর্যটকদের স্বামীর কবরের পাশে চিরনিদ্রায় শায়িত খালেদা জিয়া জনজোয়ারে খালেদা জিয়ার জানাজা অনুষ্ঠিত ঢাকায় পৌঁছেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর খালেদা জিয়ার জানাজায় অংশ নিতে ঢাকায় পাকিস্তানের স্পিকার মানিক মিয়া এভিনিউয়ে জনতার ঢল সংসদ ভবনের পথে খালেদা জিয়ার মরদেহ কক্সবাজারে খালেদা জিয়ার শেষ সফর ছিলো ২০১৭ সালে থার্টি ফার্স্টে লক্ষাধিক পর্যটকের সমাগম হবে: মানতে হবে পুলিশী নির্দেশনা, বার বন্ধ থাকবে শোক পালন: সাগরতীরের তারকা হোটেলগুলোতে থার্টি-ফার্স্টের আয়োজন বাতিল চকরিয়ায় যুবদল নেতাকে পিটিয়ে হত্যা রুমিন ফারহানা-নীরবসহ ৮ জনকে বিএনপি থেকে বহিষ্কার

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নিয়ে সরকারের নতুন নির্দেশনা

সেন্টমার্টিন দ্বীপ

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ–২ শাখা থেকে ১২ দফা নির্দেশনা সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’–এর আলোকে এসব নির্দেশনা কার্যকর হবে। এর লক্ষ্য হলো দ্বীপের ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রকে সুরক্ষা দিয়ে পর্যটনকে আরও দায়িত্বশীল ও টেকসই পথে আনা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনগামী কোনো নৌযানের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট অবৈধ বলে গণ্য হবে।

দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকরা কেবল দিনের বেলায় যেতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিত সংখ্যক পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন না।

সেন্টমার্টিনের সৈকতে রাতের বেলায় আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক–ঝিনুকসহ যেকোনো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের মোটরচালিত যান চলাচলও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

দ্বীপে পলিথিন বহন করা যাবে না, আর একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর ছোট প্যাকেট, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের বোতলজাত পানি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকার আশা করছে, এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং দ্বীপটি টেকসই পর্যটনের আদর্শ হিসেবে গড়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ বাস্তবায়ন বিষয়ে এক সভা আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও ই–টিকেটিং ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগ :

This will close in 6 seconds

সেন্টমার্টিন ভ্রমণ নিয়ে সরকারের নতুন নির্দেশনা

আপডেট সময় : ০৮:৩৫:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের নাজুক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ভ্রমণ নিয়ন্ত্রণে নতুন নির্দেশনা জারি করেছে সরকার। বুধবার পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পরিবেশ–২ শাখা থেকে ১২ দফা নির্দেশনা সংবলিত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।

‘সেন্টমার্টিন দ্বীপের পরিবেশ, প্রতিবেশ ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন নির্দেশিকা, ২০২৩’–এর আলোকে এসব নির্দেশনা কার্যকর হবে। এর লক্ষ্য হলো দ্বীপের ভঙ্গুর বাস্তুতন্ত্রকে সুরক্ষা দিয়ে পর্যটনকে আরও দায়িত্বশীল ও টেকসই পথে আনা।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়া সেন্টমার্টিনগামী কোনো নৌযানের অনুমতি দিতে পারবে না। পর্যটকদের অনলাইনে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েবসাইট থেকে টিকিট কিনতে হবে, যেখানে প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে। কিউআর কোড ছাড়া টিকিট অবৈধ বলে গণ্য হবে।

দ্বীপে ভ্রমণের সময়সূচিও এবার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত থাকবে। নভেম্বর মাসে পর্যটকরা কেবল দিনের বেলায় যেতে পারবেন, রাত্রিযাপন করা যাবে না। ডিসেম্বর ও জানুয়ারি মাসে সীমিত সংখ্যক পর্যটক রাত্রিযাপন করতে পারবেন। ফেব্রুয়ারি মাসে দ্বীপে পর্যটক যাতায়াত পুরোপুরি বন্ধ থাকবে। প্রতিদিন গড়ে দুই হাজারের বেশি পর্যটক প্রবেশ করতে পারবেন না।

সেন্টমার্টিনের সৈকতে রাতের বেলায় আলো জ্বালানো, উচ্চ শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি আয়োজন নিষিদ্ধ করা হয়েছে। কেয়া বনে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রয়, সামুদ্রিক কাছিম, পাখি, প্রবাল, রাজকাঁকড়া, শামুক–ঝিনুকসহ যেকোনো জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি করার ওপর কঠোর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। সৈকতে মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের মোটরচালিত যান চলাচলও সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ।

দ্বীপে পলিথিন বহন করা যাবে না, আর একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক যেমন চিপসের প্যাকেট, প্লাস্টিক চামচ, স্ট্র, সাবান ও শ্যাম্পুর ছোট প্যাকেট, ৫০০ ও ১০০০ মিলিলিটারের বোতলজাত পানি বহন নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

সরকার আশা করছে, এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেন্টমার্টিন দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হবে এবং দ্বীপটি টেকসই পর্যটনের আদর্শ হিসেবে গড়ে উঠবে।

উল্লেখ্য, সেন্টমার্টিনে পরিবেশবান্ধব ভ্রমণ বাস্তবায়ন বিষয়ে এক সভা আজ পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. ফারহিনা আহমেদ, বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ পর্যটন কর্পোরেশন ও ই–টিকেটিং ব্যবস্থাপনা সংস্থার প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।