রবিবার সকাল ৭ টা।শহরের নুনিয়াছড়ার বিআইডব্লিউটিএর ঘাট। যেখান থেকে ১৯শ ৫ জন পর্যটক নিয়ে সেন্টমার্টিনের উদ্দ্যেশ্যে যাত্রা করে ৫ টি জাহাজ।
আধা কিলোমিটার যেতেই বাঁকখালীর মোহনার আগে থেমে যায় জাহাজ গুলো। জাহাজের ক্যাপ্টেন ক্রুদের জাহাজ নোঙর করার নির্দেশ দেন।
কারণ হিসেবে জানা যায়, প্রচণ্ড কুয়াশার কারনে কিছুই দেখা যাচ্ছিলোনা। কুয়াশায় জাহাজ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ তাই অপেক্ষা বেলা বাড়ার। কিন্তু “যেখানে বাঘের ভয় সেখানে সন্ধ্যা হয়” এই প্রবাদের মতোই বেলা বাড়ার সাথে বাঁকখালী নদীতে ভাটার টান। ব্যস্ এবার চরে আটকে গেলো জাহাজ।
অবশেষে জোয়ার আসলে কোনোটি সকাল ১১ টায় আবার কোনোটি ১২ টায় ছেড়ে যায় জাহাজ।
আর সবকটি জাহাজ সেন্টমার্টিন পৌঁছায় সন্ধ্যার সময়। মাত্র দেড় ঘন্টা দ্বীপে অবস্থান করে রাতেই আবার জাহাজে চড়ে সাগরপথে ফেরার যাত্রা।
যেতে সময় লেগেছে ১১ ঘন্টা প্রায়। গিয়ে দ্বীপটা ভালো করে দেখার সুযোগ না পাওয়ার আক্ষেপ জানালেন নারায়ণগঞ্জ থেকে আসা পর্যটক নিমা রহমান। এ প্রতিবেদক কে মুঠোফোনে তিনি বলেন,জিবনে এমন কষ্ট পাইনি, এতো কষ্ট করে এসে ভালো মতো সেন্টমার্টিন ঘুরে দেখতে পারলাম না, বিষয়টা আরো কষ্টের। আর আসবো না সেন্টমার্টিন।
ঢাকার গুলশান থেকে এসেছেন আবিদুর রহমান, তিনি ক্ষোভ ঝাড়লেন জাহাজ কর্তৃপক্ষের অব্যবস্থাপনা নিয়ে। তিনি বলেন, এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি জেনেও শুধু ব্যবসার জন্যে পর্যটকদের এমন দূর্ভোগে ফেললো।
চট্টগ্রাম থেকে আসা পর্যটক মইনুল জানান,সেন্টমার্টিন ছিলো স্বপ্নের জায়গা, আজ এসে এটা দুঃস্বপ্নে পরিনত হলো।
তবে জাহাজে অবস্থান করা ট্যুর অপারেটর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আলা উদ্দিন বলেন, কুয়াশা আর ভাটার কারণে জাহাজ ছাড়তে দেরী হয়েছে, গেলো কয়েকদিন ধরে এমন অনিয়ম হচ্ছে। তবে তিনি জানান,বেশীর ভাগ পর্যটক আসে সেন্টমার্টিনে রাত্রি যাপন করতে। তাই পৌঁছাতে দেরী হলেও তাদের সমস্যা হয় না।
এদিকে সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ মালিকদের সংগঠন স্কোয়াবের সাধারণ সম্পাদক হোসাইন বাহাদুর ইসলাম জানান,প্রকৃতির উপর কারো হাত নেই। কুয়াশায় জাহাজ চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ আর ভাটায় চরে আটকে গেলে জাহাজ ছাড়তে বিলম্ব হয়। তিনি জানান, সেন্টমার্টিন থেকে জাহাজগুলো কক্সবাজার ফিরতে রাত সাড়ে ১২ টা থেকে ১ টা বেজে যাবে।
শনিবার কক্সবাজার ঘাটে নোঙর করা “দি আটলান্টিক ক্রুজ” জাহাজে অগ্নিকান্ডে এক কর্মচারী নিহত হওয়ার পর জেলা প্রশাসন জাহাজ চলাচলে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে। যার মধ্যে রয়েছে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থা ও ফিটনেস আছে কি না তা ফের যাচাই করে উত্তীর্ণ জাহাজ গুলোই কেবল সেন্টমার্টিন রুটে চলাচল করবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক 






















