ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
নির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ: ‘উখিয়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি’র অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন সাংবাদিক সরওয়ার আজম মানিকের মায়ের ইন্তেকাল: টিটিএনের শোক কক্সবাজারে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় না থাকা লজ্জাজনক- জাতীয় প্রেসক্লাব সভাপতি হাসান হাফিজ চকরিয়ায় কাভার্ডভ্যানের নিচে মোটর সাইকেল: নিহত-২ প্রার্থী চুড়ান্ত করা ,তারেক জিয়ার দেশে ফেরা, এনসিপির সাথে জোট প্রসঙ্গে যা বললেন সালাউদ্দিন আহমেদ প্রস্তুতি ছিলো চুড়ান্ত: আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড়ার আগেই স্থগিত স্বীকৃতি ঘোষণার ১১ দিনের মাথায় ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি হারাল কক্সবাজার বিমানবন্দর বাহারছড়ার গহীন পাহাড়ে কোস্টগার্ডের অভিযান: নারী ও শিশুসহ ৪৪ অ’প’হৃ’ত উদ্ধার শাশুড়ির ১২ লাখ টাকার কিলারে খুন হন সালমান শাহ! যুক্তরাষ্ট্রের চাপে কখনো মাথা নত করব না—কেন হুঁশিয়ারি দিলেন পুতিন দুদিন পতনের পর স্বর্ণের দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর পদত্যাগের গুঞ্জন, যা বললো এনসিপি এনসিপি থেকে পদত্যাগ নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর খুটাখালীতে চাঁ’দার টাকায় অতিষ্ঠ লবণ চাষীরা : প্রতিবাদে মানববন্ধন টেকনাফে পুলিশের সাঁড়াশি অভিযানে অপহৃত কিশোর উদ্ধার

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে মামলার আবেদনগুলোর শুনানি শুরু হয়।

আদালতে মামলার বিষয়ে শুনানি শুরু করেন অ‍্যাডভোকেট ড. শরীফ ভুঁইয়া। অন‍্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে, তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, গেলো দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল— সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন, আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়। এ সময় তিনি ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।

পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন‍্য ২১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। তবে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট চূড়ান্ত শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়। আদালত এ মামলায় আট জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। এদের মধ্যে পাঁচ জন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। তারা হলেন— ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। অপর অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে তাদের প্রস্তাব আদালতে তুলে ধরেন। এছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দেন।

এরপর আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।

এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বর্তমানে নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়।

সরকার পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল বিভাগের ২০১১ সালের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। বাকিরা হলোন— প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ (প্রয়াত), এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।

পরবর্তীকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একই বছরের ১৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই ধরনের আবেদন জানান।

ফলে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিগতভাবে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানিতে ওঠে। সেসব আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত মামলাটি পুনরায় আপিল বিভাগের শুনানিতে ওঠে।

সূত্র:বাংলা ট্রিবিউন

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচন সম্পন্ন করতে ব্যর্থ: ‘উখিয়া স্টেশন বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমবায় সমিতি’র অন্তর্বর্তী কমিটি গঠন

This will close in 6 seconds

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের শুনানি শুরু

আপডেট সময় : ১২:৪৫:৪৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অক্টোবর ২০২৫

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে পুনরায় আপিলের ওপর শুনানি শুরু করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) সকাল ৯টা ৩৭ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের পূর্ণাঙ্গ আপিল বেঞ্চে মামলার আবেদনগুলোর শুনানি শুরু হয়।

আদালতে মামলার বিষয়ে শুনানি শুরু করেন অ‍্যাডভোকেট ড. শরীফ ভুঁইয়া। অন‍্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে আছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান।

এর আগে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় মামলাটি শুনানির দিন নির্ধারণ করা হয়। প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন সাত সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন।

সেদিন আদালতে আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান।

শুনানিকালে প্রধান বিচারপতি ড. সৈয়দ রেফাত আহমেদ বলেছিলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে দিয়ে সাময়িক সমাধান দিতে চায় না আপিল বিভাগ। নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে কার্যকর সমাধান চায় আপিল বিভাগ, যাতে এটি বারবার বিঘ্নিত না হয়। দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে এটি যাতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব রাখে, সেটিই করা হবে।’

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে দিলে, তা কখন থেকে কার্যকর হবে সে প্রশ্নও রেখেছিলেন প্রধান বিচারপতি।

জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল জানিয়েছিলেন, গেলো দেড় দশকে দেশের মানুষ শাসিতের পরিবর্তে শোষিত হয়েছে নানাভাবে। মানুষ গুম, খুন ও বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। এগুলো থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যেসব সিস্টেম ছিল— সেগুলো ধ্বংস করা হয়েছে এবং মানুষ বিচার পায়নি। যার কারণে এই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগের পতন হয়েছে। আর সেই রাজপথ থেকেই নির্ধারিত হয়েছে কে প্রধান বিচারপতি হবেন, আর কে সরকার প্রধান হবেন। জনগণের এই ক্ষমতাকে কোনোভাবেই অবজ্ঞা করার সুযোগ নেই। এসব অবজ্ঞা করলেই বিপ্লবের সৃষ্টি হয়। এ সময় তিনি ৯০ এর গণঅভ্যুত্থানের প্রেক্ষাপটও তুলে ধরেন।

পরে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পাশাপাশি পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনানির জন‍্য ২১ অক্টোবর দিন নির্ধারণ করা হয়।

প্রসঙ্গত, সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী ১৯৯৬ সালে জাতীয় সংসদে গৃহীত হয়। এর মাধ্যমে সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত হয়। তবে এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ১৯৯৮ সালে অ্যাডভোকেট এম. সলিম উল্লাহসহ তিনজন আইনজীবী হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানির পর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। তবে ২০০৪ সালের ৪ আগস্ট চূড়ান্ত শুনানি শেষে রিটটি খারিজ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থাকে বৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে ২০০৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল দায়ের করা হয়। আদালত এ মামলায় আট জন অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ করে তাদের মতামত শোনেন। এদের মধ্যে পাঁচ জন সরাসরি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার পক্ষে মত দেন। তারা হলেন— ড. কামাল হোসেন, টিএইচ খান, সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল মাহমুদুল ইসলাম, ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলাম ও ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ। অপর অ্যামিকাস কিউরি ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কেসি তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে মত দেন। ব্যারিস্টার রফিক-উল-হক ও ড. এম জহির তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার আমূল সংস্কারের পক্ষে মত দিয়ে তাদের প্রস্তাব আদালতে তুলে ধরেন। এছাড়া তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দেন।

এরপর আপিল বিভাগের সাত বিচারপতির পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ ২০১১ সালের ১০ মে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতামতের ভিত্তিতে সংবিধানের ত্রয়োদশ সংশোধনী বাতিল ঘোষণা করে রায় দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০১১ সালের ৩০ জুন জাতীয় সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী পাস হয় এবং ৩ জুলাই গেজেট প্রকাশিত হয়।

এরপর তিনটি জাতীয় নির্বাচন আওয়ামী লীগের অধীনে অনুষ্ঠিত হয়। তবে এরই মধ্যে ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট বর্তমানে নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের পতন হয়।

সরকার পতনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল বিভাগের ২০১১ সালের রায় পুনর্বিবেচনা (রিভিউ) চেয়ে ২০২৪ সালের ২৭ আগস্ট প্রথম আবেদন করেন সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারসহ পাঁচজন বিশিষ্ট ব্যক্তি। বাকিরা হলোন— প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ (প্রয়াত), এম. হাফিজউদ্দিন খান, জোবাইরুল হক ভুঁইয়া ও জাহরা রহমান।

পরবর্তীকালে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একই বছরের ১৬ অক্টোবর এবং বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার গত বছরের ২৩ অক্টোবর পৃথকভাবে পুনর্বিবেচনার আবেদন করেন। এছাড়া নওগাঁর রানীনগরের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোফাজ্জল হোসেনও একই ধরনের আবেদন জানান।

ফলে রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তিগতভাবে মোট চারটি রিভিউ আবেদন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে শুনানিতে ওঠে। সেসব আবেদনের শুনানি নিয়ে গত ২৭ আগস্ট তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলের অনুমতি দেন আপিল বিভাগ। পুনরায় এ বিষয়ে আপিল শুনবেন বলে জানান আদালত। এরই ধারাবাহিকতায় তত্ত্বাবধায়ক সরকার সংক্রান্ত মামলাটি পুনরায় আপিল বিভাগের শুনানিতে ওঠে।

সূত্র:বাংলা ট্রিবিউন