ছাত্র প্রতিনিধি-সাংবাদিক পরিচয়ে টেকনাফে ‘চেয়ারম্যান ও প্রশাসক’ পদে বসিয়ে দেয়ার কথা বলে কোটি টাকার বানিজ্য করছে বলে অভিযোগ করেছেন চট্টগ্রামের জুলাই যোদ্ধা সিয়াম ইলাহী। তার একটি ফেসবুক পোস্টে এনিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন।
সিয়াম ইলাহীর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দেওয়া পোস্টটি হুবুহু তুলে ধরা হলো-
গতকাল টেকনাফ পৌরসভায় “পৌর প্রশাসক ” নিয়োগ দিচ্ছে এমন খবর তুমুল ভাবে টেকনাফে আলোচনা হওয়ার পর আমি ব্যাপারটি নিয়ে বিস্তারিত জানতে অনুসন্ধান করলাম। অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমি যে তথ্যগুলো পেলাম তা শুনে আপনাদের ও চোখ কপালে উঠে যাবে।
কক্সবাজার থেকে একজন ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয় দেওয়া ছেলে একজন সাংবাদিকের সাথে মিলে বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যক্তিদের প্রভাব দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে এই কান্ড করে যাচ্ছে। তারা কি কি করেছে গত এক বছরে।
১] সর্বপ্রথম এই সিন্ডিকেট টি টার্গেট করে টেকনাফ উপজেলার সংবরা ইউনিয়ন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় থেকে মেম্বার থেকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করে দিবে বলে যথাক্রমে ৩ জন মেম্বার থেকে ২০ লক্ষ, ৮ লক্ষ এবং ১ লক্ষ টাকা নিয়েছে।
২] হ্নীলা ইউনিয়নে মেম্বারকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগের জন্য উক্ত সিন্ডিকেটের ২ জন যথাক্রমে একজন ১৬ লক্ষ এবং অন্যজন ৬ লক্ষ টাকা নিয়েছে।
৩] টেকনাফে পৌর প্রশাসক নিয়োগ দিবে এমন দেখিয়ে হাফেজ এনাম (বিস্তারিত আগের পোস্টে) এর কাছ থেকে অগ্রিম ২৭ লক্ষ টাকা নিয়েছে। এবং কথা হয়েছে কাজ হলে ১ কোটি করে দুইজন সর্বমোট ২ কোটি টাকা পাবে।
৪] কক্সবাজারে থেকে এই দুইজন টেকনাফের বন্দর ব্যবসায়ী এবং করিডোর ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও টাকা হাতিয়েছে এবং কক্সবাজারে কয়েক দফায় মিটিং করেছে ব্যবসায়ীদের সাথে।
৫] টেকনাফ এবং কক্সবাজারে এই সিন্ডিকেটটি বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে আওয়ামিলীগ এবং মাদক ব্যবসায়ীদের ভয় দেখিয়ে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে জানা যাচ্ছে।
এগুলো মাত্র একদিনে পাওয়া তথ্য থেকে, আমি জানি না এদের ব্যাপারে তদন্ত করলে আরো কি কি বের হয়ে আসবে। তবু ও আসিফ মাহমুদ ভাইকে অনুরোধ জানাবো এই দুইজনের ব্যাপারে সতর্ক হতে কারণ এরা বার বার বিভিন্ন নিয়োগে তদবির করছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে আর হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আমি নিশ্চিত করে বলতে পারবো এদের এই চাঁদাবাজির ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ ভাই কিছুই জানেন না, অথচ উনার নাম ভাঙিয়ে এরা গত একবছরে কত অপকর্ম করে ফেলল।
এই চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে এদের জন্য সরকারকে বিতর্কিত হতে হবে, ঢাকায় সর্বশেষ রিয়াদ এবং অপুর ঘটনার মতোই এরা এতদিন ধরে এসব করে যাচ্ছে, প্রিয় টেকনাফবাসী এদের ব্যাপারে সতর্ক হোন, আপনারা যারা এদের হাতে ইতোমধ্যে বিভিন্ন পদের লোভে টাকা দিয়েছেন তাদের কে বলতে চাই অনুগ্রহপূর্বক ভবিষ্যতে এরা আবারো এরকম কোনো কাজে ফোন করলে কিংবা গেলে এদের ধরিয়ে দিবেন। সর্বোপরি সবাই এই চাঁদাবাজদের থেকে সতর্ক থাকবেন,সরকারি যেকোনো কাজ সরাসরি সরকারি দপ্তরে গিয়ে করবেন কোনো মিডলম্যান ধরে এভাবে প্রতারিত হবেন না।”
সিয়াম ইলাহী জুলাই আন্দোলনে চট্টগ্রামের অন্যতম সম্মুখসারীর যোদ্ধা। তার নিজবাড়ী টেকনাফ পৌরসভার কুলাল পাড়ায়। সিয়াম ইলাহীর দেয়া পোস্টটি নিয়ে টেকনাফে চলছে আলোচনা। পোস্টটির কমেন্ট সেকশানে গিয়ে দেখা যায়, এ অপকর্মের সাথে জড়িতদের মুখোশ উন্মোচন এবং শাস্তির আওতায় আনার দাবী জানিয়েছেন অনেকেই।