আবুল আলী:
প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ায় কক্সবাজারে টেকনাফে সমুদ্র-নাফনদের ঢেউরের উচ্চতা বেড়েছে আগে থেকে বেশি। যার ফলে শুক্রবার সকাল ১০টা থেকে সেন্টমাটিন দ্বীপ ছাড়ছে মানুষরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, ‘কেন্দ্রীয় ভাবে ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে সেভাবে টেকনাফে মানুষের মাঝে প্রভাব দেখা যায়নি। তবে সব চেয়ে বেশি ব্যস্ত ছিল লবন চাষীরা। তবে নদী পাড়ের মানুষ ঘরবাড়ি ছাড়ছে। আর জেলেরা তাদের মাছ ধরার ট্রলার-নৌকাগুলো কূলে নিরাপদে নিয়ে আসেন। এছাড়া শুক্রবার সকালে কাঠের ট্রলারে করে সেন্টমার্টিন থেকে আসা ৬’শ মানুষ নিয়ে দুটি ট্রলার টেকনাফ-শাহপরীর দ্বীপ ঘাটে ভিড়ে। যারা ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ভয়ে দ্বীপ ছেড়ে চলে আসেন।
এর মধ্য দ্বীপ ছেড়ে আসা সেখানকারবাসিন্দা শহিদুল ইসলাম জানান, ‘দ্বীপের চারদিকে পানি। সকালে বাতাসের গতি বৃদ্ধি হওয়ার সাথে সাথে পানির ঢেউ বেড়েছে। আমরা ভয়ে পরিবার নিয়ে টেকনাফে চলে এসেছি। আমাদের মতো অনেকে দ্বীপ ত্যাগ করেছেন।
সেন্টমার্টিন দ্বীপের বাসিন্দা জয়নাল বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র ভয়ে দুপুর একটার দিকে আমরা সপরিবার সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফে চলে এসেছি আসার পথে দেখলাম সমুদ্রের উত্তর হালকা হালকা বাতাস শুরু হয়েছে । ফলে দ্বীপের অনেক মানুষ ভয়-ভীতির মধ্য আছেন।
তিনি বলেন, আজকেও প্রায় ৫’শ মানুষ দ্বীপ ছাড়ছে। মুলত স্বচ্ছ পরিবারের লোকজন দ্বীপ ছাড়ছে। গত কয়েকদিনে প্রায় ২ হাজারের মতো মানুষ দ্বীপ ছেড়েছে।
উপজেলা প্রশাসন বলছে,ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ থেকে বাঁচতে কক্সবাজারের টেকনাফে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। বিশেষ করে সেন্টমার্টিন দ্বীপে লোকজনকে সচেতনতার পাশাপাশি ইতিমধ্য সতর্ক থাকতে বলা হচ্ছে। এ দুর্যোগে স্থানীয়দের জন্য উপজেলায় হোটেল-মোটেলসহ ১০১টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ ডাকবাংলোগুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। তার মধ্য সেন্টর্মাটিনে ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। বিশেষ জোন হিসেবে সেন্টমার্টিন-শাহপরীর দ্বীপের জন্য নৌবাহিনীসহ বিজিবি, পুলিশ, কোস্ট গার্ড, ফায়ার সার্ভিস, মেডিকেল টিমসহ স্বেচ্ছাসেবীদের প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া সাগরে মাছ শিকার জেলেদেলের কূলে ফিরে আসতে মাইকিং করা হচ্ছে।
টেকনাফ পৌরসভার প্যানেল মেয়র মুজিবুর রহমান জানান, ‘আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে এখনো আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার সময় আসেনি। কিন্তু আমরা সবাইকে সর্তক করেছি।
এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো: কামরুজ্জামান বলেন,‘আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। মূলত সাগরের বুকে জেগে উঠা বিচ্ছিন্ন দ্বীপ সেন্টমার্টিনকে বাড়তি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া আমাদের থেকে সেটি বিচ্ছিন্ন। তাই দূর্যোগ মোকাবিলায় দ্বীপের জন্য আমাদের নৌবাহিনীও প্রস্তুত রয়েছে।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান, উপকূলের লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার সেই পরিস্থিতি এখনও হয়নি। তবে দ্বীপবাসীকে সতর্ক থাকতে প্রত্যাক গ্রামে গ্রামে সচেতনতা করা হচ্ছে। দ্বীপে হোটেলসহ ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রের পাশাপাশি দ্বীপে সিপিপির ১৩’শ স্বেচ্ছাসেবি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। অনেক লোকজন দ্বীপ ছেড়েছে।
শাহপীর দ্বীপ জালিয়া পাড়ার ইউপি সদস্য আবদুস সালাম বলেন, তাঁর এলাকার নদীর পাড়ের শতাধিক মানুষ অন্যত্রে সরে গেছে। আমরা সবাইকে উদ্বুদ্ধ করছি যাতে আশ্রয়কেন্দ্রে চলে যায়।