Thursday, December 7, 2023

শিশুদের শারীরিক শাস্তি বিলোপে আন্তর্জাতিক দিবস উপলক্ষে কক্সবাজারে সেভ দ্য চিলড্রেন এর ১৫ দিনব্যাপি আয়োজন

মো মোরশেদ:

ইন্টারন্যাশনাল ডে টু এন্ড করপোরাল পানিশমেন্ট বা শারীরিক শাস্তি বিলোপে আন্তর্জাতিক দিবস পালন করা হয় প্রতিবছর ৩০ এপ্রিল। এ উপলক্ষে এবছর কক্সবাজারে সেভ দ্য চিলড্রেন এর ১৫ দিনব্যাপি আয়োজন চলমান রয়েছে। আয়োজনের মধ্যে রয়েছে শিশু, অভিভাবক ও কমিউনিটিকে নিয়ে টেকনাফ, সাবরাং, জালিয়াপালং, কক্সবাজার সদর এলাকায় সচেতনতা মূলক সেশন ও র‍্যালি। স্কুল এবং কমিউনিটিতে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আলোচনা এবং সচেতনতামূলক ভিডিও প্রদর্শনী চলমান আছে যা আগামিকাল সোনাইছরি প্রাইমারি স্কুলে প্রদর্শনীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে। এছাড়া শিশু ও কিশোর কিশোরীদের অংশগ্রহণে সেভ দ্য চিলড্রেন ও বিটা সমন্বিতভাবে ১০ এবং ১১ মে কক্সবাজার পৌরসভার ওয়ার্ড ১, ২ ও ১২ তে পথনাটকের আয়োজন করছে।

শিক্ষক, অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের নিয়ে কক্সবাজার পৌরসভা এলাকায় খেলাধুলা, মতবিনিময় এবং আলোচনার আয়োজন করা হচ্ছে। পাশাপাশি শিশুদের জন্য নিরাপদ শিক্ষাঙ্গন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে এই ধারণাকে নিয়ে চিত্রাঙ্কন অনুষ্ঠান আয়োজিত হতে যাচ্ছে টেকনাফ, সাবরাং, জালিয়াপালং ও কক্সবাজারে । একই আয়োজন করা হচ্ছে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের জন্য ষোলটি ক্যাম্পে।

কক্সবাজার, টেকনাফ ও উখিয়ার থানার মোট ৯ টি বিদ্যালয়ের অংশগ্রহণে আন্তঃবিদ্যালয় রচনা প্রতিযোগিতা আয়োজন করেছে সেভ দ্য চিলড্রেন। অংশগ্রহণকারী বিদ্যালয়গুলো হল- কক্সবাজার পৌরসভার উপকূলীয় আদর্শ শিক্ষা নিকেতন, সৈকত বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও উত্তরণ মডেল হাই স্কুল; উখিয়ার চাকবৈঠা বিদ্যালয়, হামেদিয়া দারুচ্ছুন্না দাখিল মাদ্রাসা ও জালিয়াপালং উচ্চ বিদ্যালয় এবং টেকনাফের গভর্নমেন্ট টেকনিক্যাল স্কুল এন্ড কলেজ, স্কলার্স স্কুল এন্ড কলেজ ও শাহপরীরদ্বীপ হাজী বশির আহমদ উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীদের আগামী ১৫ মে এর মধ্যে রচনা লিখে নিজ নিজ বিদ্যালয়ে জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে, যেখান থেকে বাছাই করে সেরার পুরস্কার দেয়া হবে।

বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শারীরিক শাস্তি নিষিদ্ধ করতে ২০১১ সালে একটি পরিপত্র জারি করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরিপত্র মোতাবেক “শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র ছাত্রীদের শারীরিক ও মানসিক শাস্তির ফলে একদিকে যেমন শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত হয় অপরদিকে ছাত্র ছাত্রীদেরকে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়। শারীরিক ও মানসিক শাস্তি রহিত করা হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আনন্দঘন পরিবেশ বজায় থাকবে এবং শিশুরা সুন্দর ভাবে গড়ে উঠবে”। শারীরিক শাস্তি বলতে এমন শাস্তি বোঝায়, যেখানে কোনো না কোনো মাত্রার ব্যাথা বা অস্বস্তি প্রদানের উদ্দেশ্যে শারীরিক বল প্রয়োগ করা হয়। সকল প্রকার নিষ্ঠুর ও অবমাননাকর আচরণ এ ধরনের শাস্তির অন্তর্ভুক্ত।

সেভ দ্য চিলড্রেন এর শিশু সুরক্ষা বিভাগের সিনিয়র প্রোগ্রাম ম্যানেজার জনাব মোস্তফা ফিরোজ বলেন, “কক্সবাজারে আমরা ২০১২ সাল থেকে কাজ করছি। ২০১৭ এ শুরু হওয়া রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর জন্য মানবিক সহায়তা কার্যক্রমের পাশাপাশি স্থানীয় জনসাধারণের উন্নয়নেও পর্যায়ক্রমে আমরা আমাদের কার্যক্রম সম্প্রসারণ করেছি। সবাইকে সাথে নিয়ে আমরা আমাদের কর্মসূচির মাধ্যমে এই অঞ্চলে শিশু সুরক্ষার জন্য একটি টেকসই পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা করছি। ”

কক্সবাজারের স্থানীয় ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীতে পরিচালিত এসকল শিশু সুরক্ষা কর্মসূচিতে সমাজের সকল স্তরের ভূমিকা ও অংশগ্রহণের উপরে এর সাফল্য অনেকাংশে নির্ভর করে । সেভ দ্য চিলড্রেন বাংলাদেশে বিগত ৫০ বছর ধরে এবং কক্সবাজারে ২০১২ সাল থেকে শিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। এই জেলার স্থানীয় জনগোষ্ঠীর পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিতকল্পে সেভ দ্য চিলড্রেন নানা প্রকল্প পরিচালনা করছে।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ