আব্দুর রশিদ মানিক :
সপ্তাহব্যাপী পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভাল উপলক্ষে কক্সবাজারের হোটেল-মোটেলের ৬০ শতাংশ এবং রেস্তোরাঁয় ১৫ শতাংশ ছাড় ঘোষণা করা হয়। পর্যটকদের ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে কথা দিয়ে কথা না রাখার অভিযোগ উঠেছে হোটেল-মোটেল রেস্তোরাঁ মালিকদের বিরুদ্ধে। এমন অভিযোগ পর্যটকদের।
বিষয়টি খতিয়ে দেখতে টিম টিটিএন হোটেল-মোটেল জোনের ২০ টি রেস্তোরাঁ এবং হোটেলে পর্যটক বেশে সরেজমিনে গিয়ে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে। বেশিরভাগ হোটেল-মোটেল রেস্তোরাঁ মানছে না তাদের সংগঠন কর্তৃক দেওয়া ছাড়ের নির্দেশনা।
হোটেল-মোটেল জোনের নিউ সোনারগাঁও রেস্তোরাঁ এন্ড বিরানী হাউস। রেস্তোরাঁ মালিক সমিতি পর্যটন মেলা উপলক্ষে ১৫ শতাংশ ছাড় দেওয়ার ঘোষণা দিলেও তা বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে পর্যটকদের আগের দামেই বিক্রি করছে সকল খাবার। ছাড়ের নির্দেশনা সম্পর্কে জানতে চাইলে ইনিয়েবিনিয়ে কথা বলতে থাকেন রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষ।
এরপর আমরা পর্যটক বেশে যাই দি নিউ ঢাকা রেস্তোরাঁ এন্ড বিরানী হাউজে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ছাড়ের ঘোষণার ব্যানার রাখা হয়েছে ভেতরে। তারাও আগের দামেই বিক্রি করছে খাবার।
সোনারগাঁও, নিউ ঢাকা রেস্তোরাঁর মতো, সেভেন স্টার রেস্তোরাঁ, পূর্বাসা রেস্টুরেন্ট, বে মেরিনা রেস্টুরেন্টে, হোটেল আই বীচ এন্ড বিরানী হাউস, ঢাকা কোয়ালিটি রেস্তোরাঁ, ধানসিঁড়ি রেস্টুরেন্ট এন্ড বিরাণী হাউজসহ আরও অনেক রেস্তোরাঁ আছে সবখানেই ছাড়ের নামে প্রতারণা করা হচ্ছে পর্যটকদের।
বিষয়টি খতিয়ে দেখে সংগঠনের নির্দেশনা অমান্যকারী রেস্তোরাঁগুলোর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান কক্সবাজার রেস্তোরাঁ মালিক সমিতির সভাপতি নইমুল হক চৌধুরী টুটুল।
রেস্তোরাঁগুলোর মতো হোটেল-মোটেলেও একই অবস্থা। রেস্তোরাঁয় মূল্য তালিকার লিস্ট থাকলেও হোটেলে নেই মূল্য তালিকা। সেখানে নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম বাড়িয়ে সেগুলোর উপর মূল্যছাড় দিচ্ছে হোটেলগুলো। যেগুলো শুভঙ্করের ফাঁকি। আমরা হোটেল সি ব্রীজ, সাউথ বীচ, বে মেরিনা, হোয়াইট বীচ, বীচ পার্ক, উর্মি গেস্ট হাউসে গিয়ে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।
হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউজ মালিক সমিতির সাংগঠনিক সম্পাদক হাফিজুর রহমান লাভলু বলছেন, দালাল নির্ভর হোটেলগুলো ইচ্ছেমতো দাম রাখছে। হোটেল-মোটেল মালিক সমিতির আওতাভুক্ত হোটেলগুলো দাম বেশি রাখলে তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া হবে ব্যবস্থা।
দাম বাড়তি রাখার অভিযোগে হোটেল-মোটেল রেস্তোরাঁয় অভিযানও চালিয়েছে জেলা প্রশাসন। তারপরও নির্দেশনা মানছে না তারা। অভিযোগ পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিভীষণ কান্তি দাশ।
পর্যটন মেলা ও বীচ কার্নিভালে বিশাল ছাড়ের ঘোষণা দিয়ে এমন প্রতারণা পর্যটন খাতে বিরুপ প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বীচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সদস্য রেজাউল করিম।