Wednesday, December 6, 2023

২০ রোহিঙ্গাসহ ২৫ সদস্যের টিম মিয়ানমার যাচ্ছে শুক্রবার: এ মাসেই শুরু হতে পারে প্রত্যাবাসন

মোহাম্মদ আয়াছুল আলম   :

রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের নতুন সম্ভাবনার দ্বার উন্মোচন হতে চলেছে। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে এ মাসেই শুরু হতে পারে প্রত্যাবাসন,এমনটাই বলছে একটি সূত্র। অন্যদিকে ২৫ সদস্যের একটি টিম শুক্রবার বাংলাদেশ থেকে মিয়ানমার যাচ্ছে সেখানে প্রত্যাবাসনে প্রস্তুতি ও পরিবেশ পর্যবেক্ষণে। ২৫ সদস্যের এ টিমে রয়েছে ২০ জন রোহিঙ্গা এবং ৫ জন বাংলাদেশি কর্মকর্তা। তারা সেখানে সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষন করবে বলে জানা গেছে।এবং একই দিন ফিরে আসার কথা রয়েছে।
মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়ার পর একে একে ৫ বছর কাটিয়ে এখন ৬ বছরে রোহিঙ্গাদের জীবন।
দিনের আলো নিভে গিয়ে সন্ধ্যা হলেই ভর করে আতঙ্ক। কখন গুম হয়ে যায়, আরসাসহ নিজেদের সন্ত্রাসীদের হাতে কখন প্রাণ যায় সেই ভয়ে তটস্থ থাকে সাধারণ রোহিঙ্গারা। তাই রোহিঙ্গারাও ফিরতে চায় নিজদেশে।

ইতোপূর্বে বাংলাদেশ থেকে পাঠানো ৮ লাখের বেশি রোহিঙ্গাদের তালিকা পাঠানো হয় মিয়ানমারের কাছে। তা থেকে ফেরত নিতে পাইলট প্রকল্প হিসেবে প্রথম দফায় প্রায় ১ হাজার ১৪০ জনকে নির্ধারণ করে মিয়ানমার। সেখান থেকে ৪২৯ জনের বিষয়ে আপত্তি জানিয়ে আসছিলো মিয়ানমার। পরে গত ১৫ মার্চ ১৫ সদস্যের একটি টেকনিক্যাল টিম বাংলাদেশের টেকনাফে এসে ৪৮০ জনের তথ্য-উপাত্ত যাচাই-বাছাই করে ফেরত যায়।

গুঞ্জন উঠেছে, যাচাই-বাছাই করা সেই ১ হাজার ১৮০জনকে দিয়ে শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরু হতে পারে। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী শুক্রবার যাচাই-বাছাই করা রোহিঙ্গাদের মধ্য থেকে একটি টিম প্রত্যাবাসনের পর তাদের যেখানে রাখা হবে মিয়ানমারের সেই জায়গাগুলো পরিদর্শন করতে যাবেন। যেখানে থাকবেন সরকারের প্রতিনিধি দলও। পরিদর্শনের পরপরই শুরু হবে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া।

এদিকে মিয়ানমারের টেকনিক্যাল টিম যাচাই-বাছাই করে যাওয়ার পর সাংবাদিকদের সাথে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার অগ্রগতি নিয়ে কথা বলেছিলেন শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মোহাম্মদ মিজানুর রহমান।
সেই সময় তিনি জানিয়েছিলেন, রোহিঙ্গা সমস্যার একমাত্র সমাধান প্রত্যাবাসন। প্রত্যাবাসন এর আগেও হয়েছিলো কিন্তু সেগুলো টেকসই হয়নি। এবার টেকসই রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন করতে সরকার মিয়ানমারের সাথে গভীরভাবে কাজ করে যাচ্ছে। টেকনিক্যাল টিমের যাচাই করে যাওয়া রোহিঙ্গাদের দিয়ে শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরুর আশা তার।

২০১৭ সালে নিজদেশে নির্যাতনের শিকার হয়ে বাংলাদেশের উখিয়া টেকনাফে আশ্রয় নেয় ১০ লাখের বেশি রোহিঙ্গা। ধীরে ধীরে রোহিঙ্গারা যেমন স্থানীয়দের কাছে বোঝা হয়ে উঠেছে তেমনি রোহিঙ্গারাও আশ্রিত জীবন থেকে বের হয়ে নিজদেশে ফিরতে চায়। প্রত্যাবাসন বা শুক্রবারের পরিদর্শন নিয়ে সরকারি কর্মকর্তারা যদিওবা মুখ খুলেননি এখনও, তবে একটি সূত্র বলছে পরিস্থিতি প্রত্যাবাসনের অনূকুলে। ২০০৫ সাল থেকে বন্ধ রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। ইতোমধ্যে বেশ কয়েকবার প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেয়া হলেও তা নানা কারনে সফল হয়নি। তবে এবার আশার আলো দেখছেন বিশ্লেষকেরা।

আরও খবর

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

জনপ্রিয় সংবাদ