ঢাকা ০৬:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা চ্যালেঞ্জিং হলেও সুস্থ-সবল প্রজন্ম গড়ে তুলতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা জিনিয়াসহ আটকরা এখনো থানায় জুলাই আন্দোলনের নেতা জিনিয়াসহ আটকদের মুক্তি দাবী ও শিক্ষকদের আন্দোলনে উদীচীর সংহতি দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল

বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ফিরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে থেকে সাদা রঙের পাজেরো জিপে করে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে বাসায় পৌঁছান তিনি।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় তিনি বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে বাসায় রওনা হন। কিলো দশেকের পথে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে তার বাসায় পৌঁছাতে লেগে যায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময়।

বিএনপি নেত্রী সাধারণত গাড়ির সামনে না বসলেও এদিন তাকে সেখানে আসন নিতে দেখা গেছে। পেছনের আসনে বসেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি।

ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার মেজ বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, শামীমের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহীনা জামান বিন্দু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ছিলেন সেখানে।

খালেদা জিয়ার জন্য গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে ‘ফিরোজা’ আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত করার কথা বিএনপির তরফে জানানো হয়েছিল।

এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপাসনকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাকে বহনকারী গাড়ি খিলক্ষেত, কুর্মিটোলা, নৌসদর দপ্তর হয়ে ফিরোজায় পৌঁছায়।

এসময় সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায়। বিএনপি নেত্রী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন। এসময় নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

ফিরোজায় ও তার সামনের সড়কে সেনা, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দেখা গেছে।

এর আগে বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

গত জানুয়ারিতে যেভাবে লন্ডনে গিয়েছিলেন, সেভাবেই কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে খালেদা জিয়া দেশে এলেন। তার সঙ্গে এসেছেন দুই পুত্রবধূ- তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরও এসেছেন তার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদসহ ১৪ জন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান।

সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। টানা ১৭ দিন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন।

খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হন। সেখানে ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জায়মা রহমান আবেগঘন পরিবেশে তাকে বিদায় জানান।

২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে লন্ডনেই আছেন তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান। ১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরলেন জোবাইদা; তবে তারেক কবে ফিরতে পারবেন- তা এখনো নিশ্চিত নয়।

ছেলেকে দেখিয়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত বিএনপিকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, “ভাইয়াকে দেখে রেখো।”

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলের প্যানেল ঘোষণা

This will close in 6 seconds

বাসভবন ফিরোজায় পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া

আপডেট সময় : ০২:১৪:৫৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ মে ২০২৫

লন্ডনে চার মাস চিকিৎসা নেওয়ার পর দেশে ফিরে গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’য় পৌঁছেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে থেকে সাদা রঙের পাজেরো জিপে করে মঙ্গলবার দুপুর ১টা ২৬ মিনিটে বাসায় পৌঁছান তিনি।

এর আগে বেলা সোয়া ১১টায় তিনি বিমানবন্দর থেকে সড়ক পথে বাসায় রওনা হন। কিলো দশেকের পথে হাজার হাজার নেতাকর্মীদের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করে তার বাসায় পৌঁছাতে লেগে যায় ২ ঘণ্টারও বেশি সময়।

বিএনপি নেত্রী সাধারণত গাড়ির সামনে না বসলেও এদিন তাকে সেখানে আসন নিতে দেখা গেছে। পেছনের আসনে বসেন তার দুই পুত্রবধূ জোবাইদা রহমান ও সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি।

ফিরোজায় খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান তার মেজ বোন সেলিমা ইসলাম, ছোট ভাই শামীম ইস্কান্দার, শামীমের স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, জোবাইদা রহমানের বড় বোন শাহীনা জামান বিন্দু এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। এছাড়া মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ ছিলেন সেখানে।

খালেদা জিয়ার জন্য গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কে ‘ফিরোজা’ আগেই পুরোপুরি প্রস্তুত করার কথা বিএনপির তরফে জানানো হয়েছিল।

এর আগে সকাল ১০টা ৪০ মিনিটে বিএনপি চেয়ারপাসনকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্স ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এরপর বেলা সোয়া ১১টার দিকে তাকে বহনকারী গাড়ি খিলক্ষেত, কুর্মিটোলা, নৌসদর দপ্তর হয়ে ফিরোজায় পৌঁছায়।

এসময় সড়কের পাশে অবস্থান নেওয়া হাজার হাজার নেতাকর্মী জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা হাতে নিয়ে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানায়। বিএনপি নেত্রী গাড়ি থেকে হাত নেড়ে নেতাকর্মীদের শুভেচ্ছার জবাব দেন। এসময় নেতাকর্মীরা ‘খালেদা জিয়ার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’, ‘খালেদা, জিয়া’, ‘তারেক, রহমান’, ‘খালেদা জিয়া ভয় নাই, রাজপথ ছাড়ি নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দেন।

ফিরোজায় ও তার সামনের সড়কে সেনা, বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ সদস্যদের কড়া নিরাপত্তা দেখা গেছে।

এর আগে বিমানবন্দরে খালেদা জিয়াকে স্বাগত জানান বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সালাহউদ্দিন আহমদ, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু ও সেলিমা রহমান।

গত জানুয়ারিতে যেভাবে লন্ডনে গিয়েছিলেন, সেভাবেই কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে চড়ে খালেদা জিয়া দেশে এলেন। তার সঙ্গে এসেছেন দুই পুত্রবধূ- তারেক রহমানের স্ত্রী জোবাইদা রহমান ও আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী সৈয়দা শামিলা রহমান সিঁথি।

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে আরও এসেছেন তার মেডিকেল বোর্ডের প্রধান শাহাবুদ্দিন তালুকদার, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এ জেড এম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য এনামুল হক চৌধুরী, নির্বাহী কমিটির সদস্য তাবিথ আউয়াল, লন্ডন বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, সাধারণ সম্পাদক কয়ছর এম আহমেদসহ ১৪ জন।

৭৯ বছর বয়সী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন থেকে লিভার সিরোসিস, কিডনি, হার্ট, ডায়াবেটিস, আর্থ্রাইটিসসহ নানা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছেন। তিনি উন্নত চিকিৎসার জন্য কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানির পাঠানো রাজকীয় বহরের বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে গত ৭ জানুয়ারি লন্ডনে যান।

সেখানে লন্ডন ক্লিনিকের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অধ্যাপক প্যাট্রিক কেনেডি ও অধ্যাপক জেনিফার ক্রসের তত্ত্বাবধায়নে চিকিৎসাধীন ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন। টানা ১৭ দিন ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন থাকার পর তিনি ২৫ জানুয়ারি থেকে ছেলে তারেক রহমানের বাসায় ছিলেন।

খালেদা জিয়া দেশে ফিরতে লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে স্থানীয় সময় সোমবার বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে কাতারের আমিরের এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে রওনা হন। সেখানে ছেলে তারেক রহমান ও নাতনি জায়মা রহমান আবেগঘন পরিবেশে তাকে বিদায় জানান।

২০০৮ সালে জরুরি অবস্থার সময়ে দেশ ছাড়ার পর থেকে লন্ডনেই আছেন তারেক রহমান এবং তার স্ত্রী জোবাইদা রহমান। ১৭ বছর পর শাশুড়ির সঙ্গে দেশে ফিরলেন জোবাইদা; তবে তারেক কবে ফিরতে পারবেন- তা এখনো নিশ্চিত নয়।

ছেলেকে দেখিয়ে বিমানবন্দরে উপস্থিত বিএনপিকর্মীদের উদ্দেশে খালেদা জিয়া বলেন, “ভাইয়াকে দেখে রেখো।”

সূত্র : বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম