২১ জুলাই ২০২৫, বেলা ১টা ৬ মিনিটে, ঢাকা বিমানবাহিনীর F‑7 BGI প্রশিক্ষণ বিমান উড্ডয়ন করার কিছুক্ষণের মধ্যেই উত্তরার Milestone School and College-এর (Diabari, Uttara) ভবনের উপর বিধ্বস্ত হয়। এতে প্রথমে দুই জন নিহতের (পাইলটসহ) খবর থাকলেও পরে সন্ধ্যা ৭ টা নাগাদ নিহতের সংখ্যা ১৯ বলে গণমাধ্যম থেকে জানা পাশাপাশি ১৬৪ জন আহত, যার মধ্যে প্রায় ৭২ জন গুরুতর অবস্থায় বার্ন ইউনিটে ভর্তি। Milestone School and College, প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা লেখাপড়া করে, দুর্ঘটনার সময় শত শত শিশু ও শিক্ষক সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে সুত্র নিশ্চিত করেছে।
স্থানীয় সংবাদে দেখা গেছে, হেলিকপ্টার যোগে দু’জন গুরুতর আহতদের নেয়া হয় সামরিক হাসপাতালে। দুর্ঘটনার পর যুদ্ধকালীন হেলিকপ্টার, ফায়ার সার্ভিস ও বর্ডার গার্ডের টিম উদ্ধার কাজে নিয়োজিত ছিলেন ।
ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম ঘনবসতিপূর্ণ শহর যা ঢাকাকে বিশ্বে জনঘনত্বের দিক থেকে উপরের সারিতে দেখানো হয়েছে। World Population Review 2024 অনুযায়ী: প্রতি বর্গকিলোমিটারে জনসংখ্যা ৫০,০০০+ । এতো ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় বিমান প্রশিক্ষণে নিরাপত্তা লঙ্ঘন হতে পারে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন।
বিকল্প বাস্তব সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়ে কতটুকু ভাবছি? বাংলাদেশে রয়েছে প্রশস্ত ও কম জনবসতিপূর্ণ অঞ্চল; সৈয়দপুর, যশোর, বরিশাল, রাজশাহী যেখানে অপেক্ষাকৃত জনসংখ্যা কম, প্রশিক্ষণ বাস্তবায়নের জন্য অধিকতর নিরাপদ বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন। কক্সবাজার; প্রাকৃতিক সমুদ্র সৈকত, প্রশস্ত আকাশ ও মুক্ত এলাকা যেখানেও নিরাপদ প্রশিক্ষণ সম্ভব বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন।
জন ন্যান্স, আন্তর্জাতিক এভিয়েশন এ নিরাপত্তা বিশ্লেষক বলেন; “প্রশিক্ষন ফ্লাইট গুলোকে যথাসম্ভব ঘনবসতিপূর্ন শহুরে এলাকা থেকে দুরে রাখা উচীত”। আন্তর্জাতিক সংস্থা ICAO বলে “নুন্যতম জনসংখ্যার এক্সোপোজারসহ নির্ধারিত আকাশ সীমায় প্রশিক্ষন এবং পরীক্ষামূলক ফ্লাইট পরিচালনা করা উচীত”।
এই ধরনের ভয়াবহ দুর্ঘটনা; বিশেষ করে Milestone School and College এর মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের উপর, সন্দেহাতীত ভাবে আমাদের শিক্ষা দেয় যে, বদ্ধ শহুরে প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে অবিলম্বে প্রশাসন ও নিরাপত্তা সংস্থা গুলোর পদক্ষেপ জরুরি।
ঢাকার ঐতিহ্য রক্ষা করতে চাইলে, প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শহরের বাইরে সরিয়ে নেওয়া, নিরাপদ প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করা, এসব এখনই অপরিহার্য।
সূত্র: banglanews24.com এবং AP News, Reuters, The Business Standard, The Financial Express, ও Wikipedia
লেখক:
শেখ জাহাঙ্গীর হাছান মানিক, চিন্তক ও গবেষক