ঢাকা ০৫:১০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২০ অগাস্ট ২০২৫, ৪ ভাদ্র ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে? টেকনাফে এসে অপহরণের শিকার সেন্টমার্টিনের যুবক: ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি স্বাধীনতাবিরোধী ও সরকারসৃষ্ট দল দুটি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়: হাফিজ উদ্দিন বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ জলসীমানায় মাসব্যাপী জরিপ করবে নরওয়ে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপর প্রাধান্য দিলে ‘খারাপ নজির’ সৃষ্টি হবে: সালাহউদ্দিন আহমেদ দেশের মানুষ এখন সেনাসদস্যদের দিকে তাকিয়ে আছে: সেনাপ্রধান যুবকের জরিমানাসহ ৭ বছরের কারাদণ্ড বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশি অংশে জরিপে নামছে নরওয়ের গবেষণা জাহাজ আন্তর্জাতিক মানের নির্বাচন করতে ৪ মিলিয়ন ইউরো দেবে ইইউ বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হলেন ইঞ্জিনিয়ার মোহাম্মদ সহিদুজ্জামান ফেব্রুয়ারিতেই নির্বাচন, এরপর আমরা বিদায় নেব : আসিফ নজরুল তিস্তা প্রকল্পে চীনা ঋণ নিতে চায় সরকার, চেয়েছে ৬ হাজার ৭০০ কোটি টাকা ছাত্ররাজনীতিতে পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা ১৮ থেকে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত জাতীয় মৎস্য সপ্তাহের উদ্বোধন ইনানীতে আত্মপ্রকাশ করলো শফির বিল জেলে কল্যাণ সমিতি

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধকে হত্যা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পূর্বশক্রুতার জেরে বসতঘরে ঢুকে আবদুর রহিম(৬০)নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই)সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী আবদুল্লাহর দোকানের পাশ্ববর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুর রহিম মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বিগত ১০ বছর ধরে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীতে বসবাস করে আসছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,  ঘটনার দিন বৃদ্ধ আবদুর রহিম ও তার মেয়ের নাতি আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া বসতবাড়িতে কেউ ছিল না। সকালের দিকে নাতি তুহিন ও তার নানা একই সাথে বসে  খাবার খায়। নাতি খাবার খেয়ে স্থানীয় নুরানি মাদ্রাসায় চলে যায়। বিকেলের দিকে মাদ্রাসা ছুটি শেষে নাতি তুহিন বাসায় ফিরে তার নানাকে না দেখে ডাকতে থাকে। পরে বাড়ির একটি রুমের সামনে মাটিতে তার নানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির লোকজন ও দোকানদার জানায়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধ আবদুর রহিমের নিথর দেহ দেখতে পায়। পরে বাড়ির পাশের এক মেয়ে নিহতের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম ও মেয়েকে মুঠোফোনে ঘটনার খবর দেয়। এসময় তারা নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় তারা।

খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাশ, চকরিয়া থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে থানার এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে লাশ থানায় নিয়ে আসে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওই সময় বাড়ির টাকাসহ বিভিন্ন কিছু লুট করে নিয়ে যায়।

নিহত আবদুর রহিমের কন্যা শামীমা আক্তার রিনা বলেন, দুই দিন ধরে তার মা ও তিনি তাদের পূর্বের বাড়ি মাতারবাড়িতে অসুস্থ ছোট ভাই ওয়াহেদকে দেখতে যান। তিনি জানান, স্থানীয় প্রতিবেশী আব্বাসের স্ত্রী লিনুর সাথে ময়লা ফেলা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা আবদুর রহিম ও বোনের ছোট্ট ছেলে নুরানী মাদ্রাসায় পডুয়া ভাগিনা আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া আর কেউ ছিল না।

তিনি বলেন, আমি আর মা মাতাবাড়িতে যাওয়ার সময় বাড়ির আলমারিতে গরু ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রেখে যাই। বাবা’কে  কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। আলমারিতে দায়ের কোপ দেখা গেছে। আলমারিতে রাখা টাকাও নেই।

তিনি আরো বলেন, মূলত স্থানীয় প্রতিবেশী পূর্ব শত্রুতাবশত: এ ঘটনা করেছে। বাসায় কেউ না থাকায়  ওইসময় দুর্বৃত্তরা বাবা’কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। আমরা ৫ বোন, ১ভাই। এরই আগেও ২০২১ সালে আগস্ট মাসে আমার এক বোন রাকি আক্তার পপিকে হত্যা করা হয়েছিল। তার লাশের খবর পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। পরে ১২দিন পরে জানতে পেরেছি ওই বোনকে আঞ্জুমান মুফিদুলের মাধ্যমে কক্সবাজার দাফন করা হয়েছিল। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি, বাবা’র এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

দশদিন পর আবারো ঘুমধুম সীমান্তে গোলাগুলির শব্দ, কি হচ্ছে ওপারে?

This will close in 6 seconds

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধকে হত্যা

আপডেট সময় : ১২:৪৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পূর্বশক্রুতার জেরে বসতঘরে ঢুকে আবদুর রহিম(৬০)নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই)সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী আবদুল্লাহর দোকানের পাশ্ববর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুর রহিম মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বিগত ১০ বছর ধরে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীতে বসবাস করে আসছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,  ঘটনার দিন বৃদ্ধ আবদুর রহিম ও তার মেয়ের নাতি আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া বসতবাড়িতে কেউ ছিল না। সকালের দিকে নাতি তুহিন ও তার নানা একই সাথে বসে  খাবার খায়। নাতি খাবার খেয়ে স্থানীয় নুরানি মাদ্রাসায় চলে যায়। বিকেলের দিকে মাদ্রাসা ছুটি শেষে নাতি তুহিন বাসায় ফিরে তার নানাকে না দেখে ডাকতে থাকে। পরে বাড়ির একটি রুমের সামনে মাটিতে তার নানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির লোকজন ও দোকানদার জানায়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধ আবদুর রহিমের নিথর দেহ দেখতে পায়। পরে বাড়ির পাশের এক মেয়ে নিহতের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম ও মেয়েকে মুঠোফোনে ঘটনার খবর দেয়। এসময় তারা নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় তারা।

খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাশ, চকরিয়া থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে থানার এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে লাশ থানায় নিয়ে আসে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওই সময় বাড়ির টাকাসহ বিভিন্ন কিছু লুট করে নিয়ে যায়।

নিহত আবদুর রহিমের কন্যা শামীমা আক্তার রিনা বলেন, দুই দিন ধরে তার মা ও তিনি তাদের পূর্বের বাড়ি মাতারবাড়িতে অসুস্থ ছোট ভাই ওয়াহেদকে দেখতে যান। তিনি জানান, স্থানীয় প্রতিবেশী আব্বাসের স্ত্রী লিনুর সাথে ময়লা ফেলা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা আবদুর রহিম ও বোনের ছোট্ট ছেলে নুরানী মাদ্রাসায় পডুয়া ভাগিনা আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া আর কেউ ছিল না।

তিনি বলেন, আমি আর মা মাতাবাড়িতে যাওয়ার সময় বাড়ির আলমারিতে গরু ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রেখে যাই। বাবা’কে  কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। আলমারিতে দায়ের কোপ দেখা গেছে। আলমারিতে রাখা টাকাও নেই।

তিনি আরো বলেন, মূলত স্থানীয় প্রতিবেশী পূর্ব শত্রুতাবশত: এ ঘটনা করেছে। বাসায় কেউ না থাকায়  ওইসময় দুর্বৃত্তরা বাবা’কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। আমরা ৫ বোন, ১ভাই। এরই আগেও ২০২১ সালে আগস্ট মাসে আমার এক বোন রাকি আক্তার পপিকে হত্যা করা হয়েছিল। তার লাশের খবর পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। পরে ১২দিন পরে জানতে পেরেছি ওই বোনকে আঞ্জুমান মুফিদুলের মাধ্যমে কক্সবাজার দাফন করা হয়েছিল। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি, বাবা’র এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।