ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :
রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করলেন প্রধান বিচারপতি কক্সবাজারে বৃষ্টি ঝরবে আরও দুইদিন সাজেদা বেগমকে গর্জনিয়া ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব অর্পন এখন থেকে এনসিপির সঙ্গে সব সম্পর্ক ছিন্ন করছি : নীলা ইস্রাফিল দীর্ঘদিন ছাত্রদলের কমিটি না থাকায় হতাশ তৃনমূল চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধকে হত্যা ভাইরাল হওয়া কক্সবাজার জেলা ছাত্রদলের কমিটি ভুয়া বলে দাবী ডেঙ্গুতে আরও ৩ মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪০৯ সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে ৫% আসনে নারী প্রার্থী মনোনয়নের প্রস্তাব বিএনপির বিদেশি মেডিকেল টিমের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ মহেশখালী সমন্বিত উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বাতিলের দাবিতে গণপ্রতিবাদ সমাবেশ সোমবার মসজিদ ও আরবি ভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণে ২০ মিলিয়ন ডলার বরাদ্দ সৌদির গর্জনিয়া ইউপি চেয়ারম্যান বাবুলকে কারাগারে প্রেরণ সবাইকে নিয়ে আগামীর নতুন বাংলাদেশ গড়তে চাই : প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা পৌরসভায় নাগরিক হয়রানি বন্ধ, পৌর প্রশাসকের অপসারণসহ ৮ দফা দাবিতে স্মারকলিপি

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধকে হত্যা

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পূর্বশক্রুতার জেরে বসতঘরে ঢুকে আবদুর রহিম(৬০)নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই)সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী আবদুল্লাহর দোকানের পাশ্ববর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুর রহিম মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বিগত ১০ বছর ধরে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীতে বসবাস করে আসছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,  ঘটনার দিন বৃদ্ধ আবদুর রহিম ও তার মেয়ের নাতি আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া বসতবাড়িতে কেউ ছিল না। সকালের দিকে নাতি তুহিন ও তার নানা একই সাথে বসে  খাবার খায়। নাতি খাবার খেয়ে স্থানীয় নুরানি মাদ্রাসায় চলে যায়। বিকেলের দিকে মাদ্রাসা ছুটি শেষে নাতি তুহিন বাসায় ফিরে তার নানাকে না দেখে ডাকতে থাকে। পরে বাড়ির একটি রুমের সামনে মাটিতে তার নানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির লোকজন ও দোকানদার জানায়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধ আবদুর রহিমের নিথর দেহ দেখতে পায়। পরে বাড়ির পাশের এক মেয়ে নিহতের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম ও মেয়েকে মুঠোফোনে ঘটনার খবর দেয়। এসময় তারা নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় তারা।

খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাশ, চকরিয়া থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে থানার এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে লাশ থানায় নিয়ে আসে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওই সময় বাড়ির টাকাসহ বিভিন্ন কিছু লুট করে নিয়ে যায়।

নিহত আবদুর রহিমের কন্যা শামীমা আক্তার রিনা বলেন, দুই দিন ধরে তার মা ও তিনি তাদের পূর্বের বাড়ি মাতারবাড়িতে অসুস্থ ছোট ভাই ওয়াহেদকে দেখতে যান। তিনি জানান, স্থানীয় প্রতিবেশী আব্বাসের স্ত্রী লিনুর সাথে ময়লা ফেলা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা আবদুর রহিম ও বোনের ছোট্ট ছেলে নুরানী মাদ্রাসায় পডুয়া ভাগিনা আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া আর কেউ ছিল না।

তিনি বলেন, আমি আর মা মাতাবাড়িতে যাওয়ার সময় বাড়ির আলমারিতে গরু ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রেখে যাই। বাবা’কে  কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। আলমারিতে দায়ের কোপ দেখা গেছে। আলমারিতে রাখা টাকাও নেই।

তিনি আরো বলেন, মূলত স্থানীয় প্রতিবেশী পূর্ব শত্রুতাবশত: এ ঘটনা করেছে। বাসায় কেউ না থাকায়  ওইসময় দুর্বৃত্তরা বাবা’কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। আমরা ৫ বোন, ১ভাই। এরই আগেও ২০২১ সালে আগস্ট মাসে আমার এক বোন রাকি আক্তার পপিকে হত্যা করা হয়েছিল। তার লাশের খবর পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। পরে ১২দিন পরে জানতে পেরেছি ওই বোনকে আঞ্জুমান মুফিদুলের মাধ্যমে কক্সবাজার দাফন করা হয়েছিল। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি, বাবা’র এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।

ট্যাগ :
জনপ্রিয় সংবাদ

রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ করলেন প্রধান বিচারপতি

This will close in 6 seconds

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালীতে বসতঘরে ঢুকে বৃদ্ধকে হত্যা

আপডেট সময় : ১২:৪৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

কক্সবাজারের চকরিয়ায় পূর্বশক্রুতার জেরে বসতঘরে ঢুকে আবদুর রহিম(৬০)নামে এক বৃদ্ধকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে।

রোববার (২৭ জুলাই)সন্ধ্যা ৬টার দিকে উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালী আবদুল্লাহর দোকানের পাশ্ববর্তী এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহত আবদুর রহিম মহেশখালী উপজেলার মাতারবাড়ি ইউনিয়নের মাঝের ডেইল এলাকার মৃত লাল মিয়ার ছেলে। তিনি বিগত ১০ বছর ধরে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের ছাইরাখালীতে বসবাস করে আসছেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে,  ঘটনার দিন বৃদ্ধ আবদুর রহিম ও তার মেয়ের নাতি আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া বসতবাড়িতে কেউ ছিল না। সকালের দিকে নাতি তুহিন ও তার নানা একই সাথে বসে  খাবার খায়। নাতি খাবার খেয়ে স্থানীয় নুরানি মাদ্রাসায় চলে যায়। বিকেলের দিকে মাদ্রাসা ছুটি শেষে নাতি তুহিন বাসায় ফিরে তার নানাকে না দেখে ডাকতে থাকে। পরে বাড়ির একটি রুমের সামনে মাটিতে তার নানাকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে সে দৌড়ে গিয়ে পাশের বাড়ির লোকজন ও দোকানদার জানায়। তারা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে বৃদ্ধ আবদুর রহিমের নিথর দেহ দেখতে পায়। পরে বাড়ির পাশের এক মেয়ে নিহতের স্ত্রী ছেনুয়ারা বেগম ও মেয়েকে মুঠোফোনে ঘটনার খবর দেয়। এসময় তারা নিহতের শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায় তারা।

খবর পেয়ে চকরিয়া সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার (এএসপি) অভিজিৎ দাশ, চকরিয়া থানার ওসি মো: শফিকুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে। পরে থানার এসআই শফিকুল ইসলাম রাজা নিহতের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে রাত সাড়ে নয়টার দিকে লাশ থানায় নিয়ে আসে।

নিহতের পরিবারের দাবি, পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হত্যার ঘটনাটি ঘটিয়েছে। ওই সময় বাড়ির টাকাসহ বিভিন্ন কিছু লুট করে নিয়ে যায়।

নিহত আবদুর রহিমের কন্যা শামীমা আক্তার রিনা বলেন, দুই দিন ধরে তার মা ও তিনি তাদের পূর্বের বাড়ি মাতারবাড়িতে অসুস্থ ছোট ভাই ওয়াহেদকে দেখতে যান। তিনি জানান, স্থানীয় প্রতিবেশী আব্বাসের স্ত্রী লিনুর সাথে ময়লা ফেলা নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়ে আসছিল। ঘটনার দিন বাড়িতে বৃদ্ধ বাবা আবদুর রহিম ও বোনের ছোট্ট ছেলে নুরানী মাদ্রাসায় পডুয়া ভাগিনা আদিবুর রহমান তুহিন ছাড়া আর কেউ ছিল না।

তিনি বলেন, আমি আর মা মাতাবাড়িতে যাওয়ার সময় বাড়ির আলমারিতে গরু ক্রয়ের জন্য ২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রেখে যাই। বাবা’কে  কে বা কারা কুপিয়ে হত্যা করে চলে যায়। আলমারিতে দায়ের কোপ দেখা গেছে। আলমারিতে রাখা টাকাও নেই।

তিনি আরো বলেন, মূলত স্থানীয় প্রতিবেশী পূর্ব শত্রুতাবশত: এ ঘটনা করেছে। বাসায় কেউ না থাকায়  ওইসময় দুর্বৃত্তরা বাবা’কে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান। আমরা ৫ বোন, ১ভাই। এরই আগেও ২০২১ সালে আগস্ট মাসে আমার এক বোন রাকি আক্তার পপিকে হত্যা করা হয়েছিল। তার লাশের খবর পর্যন্ত পাচ্ছিলাম না। পরে ১২দিন পরে জানতে পেরেছি ওই বোনকে আঞ্জুমান মুফিদুলের মাধ্যমে কক্সবাজার দাফন করা হয়েছিল। প্রশাসনের কাছে একটাই দাবি, বাবা’র এ হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে অপরাধীকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনা হোক।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম জানায়, ঘটনাস্থল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে । লাশ ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।এই ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত পূর্বক গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। উক্ত হত্যাকান্ডের ঘটনা উদঘাটনের জন্য পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে।