কক্সবাজারের উখিয়ায় সাংবাদিকের বসতবাড়ি দখলের অভিযোগে আলোচিত ভূমিদস্যু মাহাফুজ উদ্দিন বাবু ও তার দুই সহযোগীকে জেল হাজতে প্রেরণ করেছেন আদালত। বয়স বিবেচনায় একজন আসামিকে জামিন মঞ্জুর করা হলেও বাকিদের জামিন আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আসিফ উদ্দিন মাহমুদের আদালতে আসামীরা হাজির হলে এই আদেশ দেন। এর আগে আদালত গত ২৩ জুন মামলাটি আমলে নিয়ে চারজন আসামির বিরুদ্ধে সমন জারি করেন। মামলাটি দায়ের করা হয়েছে ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ এর আওতায়, যার মামলা নম্বর সি আর-২২১/২০২৫।
সমনপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- মাহাফুজ উদ্দিন বাবু, তাইমুন উদ্দিন, তাইফুর উদ্দিন এবং আলা উদ্দিন চৌধুরী। আজ শুনানির সময় বয়স বিবেচনায় আলা উদ্দিন চৌধুরীকে জামিন মঞ্জুর করা হয়।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালের ৬ এপ্রিল উখিয়ার রত্নাপালং ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের টেকপাড়ায় সাংবাদিক জসিম আজাদের বসতভিটায় হামলা চালায় একটি সংঘবদ্ধ দল। সাংবাদিকের স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগও উত্থাপিত হয়েছে।
উখিয়া অনলাইন প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক জসিম আজাদ বলেন, “হঠাৎ ১০-১২ জনের একটি সংঘবদ্ধ দল আমার বসতভিটায় ঢুকে নিজেদের জমি দাবি করে হামলা চালায়। আমার স্ত্রীকে তারা মারধর করে। নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে আদালতের দ্বারস্থ হই।”
স্থানীয় সূত্র জানায়, হামলার নেতৃত্বে ছিলেন স্থানীয়ভাবে পরিচিত হাবি ড্রাইভারের ছেলে মাহাফুজ উদ্দিন বাবু, যিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে বিভিন্ন বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে লিপ্ত।
এক প্রবীণ বাসিন্দা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “এরা শুধু জমি না, মানুষ গিলতেও পিছপা হয় না। প্রশাসনের নাকের ডগায় এসব করছে, অথচ কেউ কিছু বলে না।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, বাবু ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরেই উখিয়ার বিভিন্ন এলাকায় ভীতি ও আধিপত্য বিস্তার করে আসছে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিক মৌখিক ও লিখিত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও প্রশাসনিক তৎপরতা ছিল সীমিত।
আইন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ভূমি অপরাধ প্রতিরোধ ও প্রতিকার আইন-২০২৩ প্রয়োগে এই ধরনের ঘটনায় আদালতের হস্তক্ষেপ একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত। তবে তারা সতর্ক করছেন, “আইনি প্রক্রিয়া যদি সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ না হয়, তাহলে ভূমিদস্যুদের লাগাম টানা সম্ভব হবে না।”